পতনের ধাক্কায় ঊর্ধ্বমুখীতায় টিকতে পারছে না পুঁজিবাজার
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
- পতনে আরো এক হাজার ২৩ কোটি টাকা চলে গেছে
- আট কোম্পানির কারণে ডিএসইর সূচক কমেছে ১৬.৫ পয়েন্ট
শুরুটা ইতিবাচক হলেও মাঝপথে এসে পতনের ধাক্কার কাছে টিকতে পারছে না। ক্রেতার চেয়ে বিক্রিচাপ বেশি থাকায় বাজার ইতিবাচক ধারায় টিকতে পারছে না। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ১৯টি খাতের মধ্যে ১৬টিখাতই লোকসানের শিকার হয়েছে গতকাল। অব্যাহত সূচকের পতন ও ৫৬ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর হারানোয় ডিএসইর মূলধন থেকে আরো হাজার কোটি টাকার বেশি বের হয়ে গেছে। সূচকের এমন পতনের নেপথ্যে ছিল ৮ কোম্পানির শেয়ার বলে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের পর্যালোচনার তথ্য থেকে জানা গেছে। সূচক পতনের নেপথ্যে থাকা কোম্পানিগুলো হলো- স্কয়ার ফার্মা, বিকন ফার্মা, খান ব্রাদার্স, কোহিনুর কেমিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্রাংক এবং লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কমার কারণে ডিএসইর সূচক কমেছে সাড়ে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে ডিএসইর তথ্য বলছে, দুপুর ১২টার আগ পর্যন্ত সূচক ইতিবাচক পথেই আগাচ্ছিল। কিন্তু এর পরই সূচক থেকে পয়েন্ট ঝরতে থাকে। বিক্রির চাপও তখন আরো বেড়ে যায়। কিন্তু ক্রেতা ছিল বিক্রেতার তুলনায় অর্ধেক। শুরু হয় পয়েন্ট খোয়া যাওয়া। দিনের লেনদেন শেষে সবগুলো সূচকই নেতিবাচক রূপ নেয়। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৮.২৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ২৩৩.৬৬ পয়েন্টে নেমে আসে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬.৪৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৩৭.২৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৭.৭৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৬৭.০৪ পয়েন্টে নেমে আসে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১২৪টির। দরপতনের কবলে ২১৯টি বা ৫৬ শতাংশের বেশি। আর দর অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টি কোম্পানির।
উত্থান-পতনের মধ্যে গতকাল ডিএসইতে মোট ১২ কোটি এক লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৫টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৩৪৯ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকায়। যা আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৭টিতে মাত্র ৬টি দর বেড়েছে। আর পতনের শিকার ২৩টি। আগের দিনের তুলনায় বাজার মূলধন ০.১৬ শতাংশ বা এক হাজার ২৩ কোটি টাকা কমে এখন ছয় লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ কোটি ২২ লাখ টাকায় দাড়িয়েছে।
এদিকে, ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩০টি কোম্পানির ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪১৮টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। যার গতকালের বাজারমূল্য ছিল ২৭ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ১০ কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, শমরিতা হসপিটাল, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাষ্ট্রিজ, বিএসআরএম লিমিটেড, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স, স্কয়ার ফার্মা, রিলায়ান্স ওয়ান দ্যা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়ান্স ইন্সুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড এবং আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। এই ১০ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকারও বেশি। আর বেশি লেনদেন হয়েছে বিচ হ্যাচারির। কোম্পানিটির ৯ কোটি ১৪ লাখ ৭১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এছাড়া শমরিতা হসপিটালের ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, গতকাল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫২.৫০ পয়েন্ট। আর সিএসই-৫০ সূচক ৬.২৪ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৮৭.৬৭ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ৩৩.৭৭ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৫টির এবং দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির। এদিন সিএসইতে মোট এক কোটি ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড ৮৭ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ টাকায় হাতবদল হয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক পর্যবেক্ষক রয়েল ক্যাপিটালের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, গতকাল ৫৩ শতাংশ বিক্রেতা ছিল পুঁজিবাজারে। কিন্তু ক্রেতা ছিল ৩৬ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ ছিল সাইডলাইনে। তবে বিক্রির চাপ ছিল ৬৩ শতাংশ। আর কেনার চাপ ছিল ৩৭ শতাংশ। এন শ্রেণীর কোম্পানি বিক্রির চাপের মুখে ছিল। তাদের শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা ক্রেতা খুঁজছিল। একদিনের লেনদেন টাকায় কমেছে ৭ শতাংশ এবং শেয়ারের পরিমাণ ১ শতাংশ। বাজারের সার্বিক নেতিবাচক অবস্থায় ডিএসইর বাজারমূলধন কমেছে ০.১৬ শতাংশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা