পুঁজিবাজারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
- ৩০ মে ২০২৪, ০০:০৫
দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে খুবই মন্দা পরিস্থিতি চলছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে স্থিতিশীল অবস্থা জানতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশন (ক্যাপমিনাফ)। গতকাল রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুঁজিবাজার বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব অবদান রাখছে। এই বাজারের সাথে প্রায় ৩৫ লাখ (পঁয়ত্রিশ) বিনিয়োগকারী ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পরোক্ষভাবে প্রায় তিন কোটি মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। দেশের এমন কোনো শিক্ষিত বেকার নেই, যে এই বাজারের সাথে সম্পৃক্ত নয়। আমাদের পুঁজিবাজারের সাথে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঘরের শিক্ষিত গৃহিণীও এ বাজারের সাথে জড়িত। যে বাজারের সাথে এত লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য জড়িত- সেই বাজারকে যেকোনো মূল্যে আমাদের সবাইকে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়নে কাজ করতেই হবে।
দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র শেয়ারবাজার আজ চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত তাদের পুঁজি হারাচ্ছে। অনেক বিনিয়োগকারী ইতোমধ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেয়ার পর তাদের নানা আশ্বাস ও আহ্বানে নতুন করে অনেক বিতর্কিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায়, বস্তাপচা কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে বাজার থেকে বেহিসাবি (বিশাল আকারের) অর্থ বের করে নেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়াসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আমরা বিনিয়োগকারীরা খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছি।
দীর্ঘ ১৫ বছর পুঁজিবাজারে যে অনিয়ম হয়েছে তারই ফলাফল এখন ভোগ করছে দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বন্ধ কোম্পানির ডিরেক্টররা ভুয়া ঊচঝ এবং আকর্ষণীয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের শেয়ারগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দিয়ে বাজার থেকে টাকা নিয়ে স্টকে পড়াসহ নানা অনিয়ম এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। গত কয়েক মাসে প্রায় ৭০ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে বিও অ্যাকাউন্ট খালি করে দিয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
ওপরের কারণগুলো পুঁজিবাজারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। পুঁজিবাজারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার পাশাপাশি বর্তমানে যোগ হয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপ।
দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বর্তমানে ১৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা মোট ঋণের ৯০ শতাংশই খেলাপি হয়ে গেছে।
প্রতিদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক কমছে আর বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বাজারের এই ডাউন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে যা বর্তমানে আরো বেশি ত্বরান্বিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার হস্তক্ষেপ কামনা করে ১২ দফা দাবি পেশ করে ক্যাপমিনাফ। বিজ্ঞপ্তি।