নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপেও থামছে না পুঁজিবাজারের পতন
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২২ মে ২০২৪, ০০:০৫
- পতন ঠেকাতে আইএসটিসিএলের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি
- ডিএসই মূলধন ১৮১৩ কোটি টাকা কমেছে
কোনোভাবেই দেশের পুঁজিবাজারের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। অব্যাহতভাবে সূচক থেকে পয়েন্ট হারানো এবং শেয়ার ও ইউনিটের দর পতন চলছেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কোনো পদক্ষেপই কাজ করছে না বাজারে। এলোপাতাড়ি পতনে চরম আতঙ্ক ও স্নায়ুচাপে বিনিয়োগকারীদের দিন কাটছে। অনেকে শেয়ার বিক্রির জন্য মরিয়া হয়েও ক্রেতা পাচ্ছে না। কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। তবে আগের দিন সোমবারের তুলনায় গতকাল মঙ্গলবার বেড়েছে লেনদেন। তারল্য কমেছে ডিএসইর ১৮১৩ কোটি টাকা।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অব্যাহত পতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আরো ২২.৫৫ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৩৭১ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৬.১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৪.৫৫ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৮.৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৯.৪২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইতে ১৭ কোটি ২৮ লাখ ৬৪ হাজার ১৩০টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৫৯১ কোটি ৬২ লাখ ১৮ হাজার টাকায়। সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৫৬১ কোটি ২১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, বিপরীতে কমেছে ২৩৫টি দর। এ ছাড়া ৫৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এ দিকে, ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩৯টি কোম্পানির ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭০৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। যার বাজারমূল্য ছিল ৭০ কোটি ৪৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। সেগুলো হচ্ছে- এসিআই লিমিটেড, ইউনিলিভার কনজ্যুমার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফেডারেল ইন্সুরেন্স এবং আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৩৩ লাখ টাকারও বেশি।
ডিএসই বলছে, কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এসিআই লিমিটেডের। কোম্পানিটির ১৭ লাখ তিন হাজার ৫০০ শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৪ কোটি ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকায়। এ ছাড়া ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ২৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকার ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৭ কোটি ৯০ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৬.৮২ পয়েন্ট কমেছে। আর সিএসই-৩০ সূচক ৭৩.৬৭ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেন হয়েছে ৭১ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৬৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির। অন্য দিকে, আগামী ২ জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের বিষয়ে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার বিএসইসির জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়, শর্তগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি শর্ত লঙ্ঘন করলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ওই কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারবে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি শেষ ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ থেকে বা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির তারিখ থেকে পরপর দুই বছরের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে।
তবে কোনো রিট পিটিশন বা আদালতে বিচারাধীন কোনো আইনি প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ এজিএম অনুষ্ঠিত না হওয়ার ক্ষেত্রে, অর্থাৎ উপ-বিচারের বিষয় বা জোরপূর্বক ঘটনা ঘটলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ বছর সময় পর্যন্ত বিবেচনা করা যেতে পারে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যদি তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংস্কার বা বিএমআরই (ভারসাম্য, আধুনিকীকরণ, পুনর্বাসন এবং সম্প্রসারণ) এর জন্য এ ধরনের কোনো সময় ছাড়া ন্যূনতম ছয় মাস ধরে একটানা উৎপাদনে না থাকলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে।
আর অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে ও বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে আনতে আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের (আইএসটিসিএল) ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে সিকিউরিটিজ কেনার সীমা (লিমিট) ৪০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল থেকে এটি কার্যকর হয়েছে।