পুঁজিবাজার ইতিবাচক, প্রশ্ন স্থায়িত্ব নিয়ে
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০
- ডিএসইর তারল্য বেড়েছে তিন হাজার ৯৯২ কোটি টাকা
- দুই ঘণ্টায় বিক্রেতা উধাও হয় পাঁচ কোম্পানির শেয়ারের
তিন দিন টানা পতনের পর ইতিবাচক পথে ফিরলেও পুঁজিবাজারের এই ইতিবাচক পথে কত সময় থাকবে সেটাই এখন প্রশ্ন। বিএসইসির নতুন কমিশন গঠনের পর গতকালই ছিল প্রথম লেনদেন। ইতিবাচক পথে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নেতৃত্বে ছিল ১০ কোম্পানি। তাদের প্রচেষ্টায় ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৩৫.৬৭ পয়েন্ট। এই ১০ কোম্পানির সূচকে যোগ করেছে ৪১.৩৯ পয়েন্ট। আর কোম্পানিগুলো হলো- পাওয়ারগ্রিড, ব্র্যাক ব্যাংক, নাভানা ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, কহিনুর কেমিক্যাল, বেস্ট হোল্ডিংস, ওরিয়ন ফার্মা, ডেল্টা লাইফ এবং সাইফ পাওয়ারটেক। আর ইতিবাচক হওয়াতে ডিএসইর বাজারমূলধন বেড়েছে ০.৫৬ শতাংশ বা তিন হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বলে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। লেনদেনের দুই ঘণ্টার মধ্যে বিক্রেতা উধাও হয়ে যায় ৫ কোম্পানির শেয়ারে।
দুই বাজারের লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে প্রথম দ্ইু ঘণ্টার লেনদেনে ১২ কোটি ৭২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড বেচাকেনা হয়েছে মোট ৪৭১ কোটি ৭৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। এই সময় দর বৃদ্ধি ও দরপতনে কোম্পানির সংখ্যায় ব্যবধান ছিল ৫০টি। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫.৬৭ পয়েন্ট বেড়ে এখন পাঁচ হাজার ৬৯৬.৭২ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৭.৮৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৫০.৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১১.৩৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২৬.৫৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে ২৬ কোটি ৭৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৯৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯৫৩ টাকা বাজারমূল্যে; যা আগের দিনের চেয়ে ৪৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৯১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৬টির, কমেছে ১৫৯টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির। লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র দু’টির, দর পতনে ২৬টি এবং দর অপরিবর্তিত আটটি মাত্র। ডিএসইর বাজার মূলধন সাত লাখ সাত হাজার ২৬ কোটি টাকা থেকে ০.৫৬ শতাংশ বেড়ে এক দিনে সাত লাখ ১১ হাজার ১৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
পাঁচ কোম্পানির শেয়ারে বিক্রেতা উধাও: লেনদেনের দুই ঘণ্টার মধ্যে বিক্রেতা উধাও হয়ে যায় পাঁচ কোম্পানির শেয়ারে। এতে কোম্পানিগুলোর শেয়ার হল্টেড হয়ে মূল্য স্পর্শ করে সার্কিট ব্রেকারে। আর কোম্পানিগুলো হচ্ছে- সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি, ই-জেনারেশন, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ও স্টাইলক্রাফট লিমিটেড বলে ডিএসইর তথ্য থেকে জানা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে বেলা ১২.১৭টা পর্যন্ত নাভানা সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের স্ক্রিনে পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৬৬৫টি শেয়ার কেনার আবেদন থাকলেও বিক্রেতার ঘর শূন্য ছিল। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৯৭ টাকা দরে লেনদেন হয়। এ সময়ে আইসিবি, ই-জেনারেশন, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার এবং স্টাইলক্রাফটের স্ক্রিনে অসংখ্য ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা নেই।
ব্লক মার্কেটে ৪১.২৯ কোটি টাকার ট্রেড :
এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৪৩টি কোম্পানি গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়। এসব কোম্পানির ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৫টি শেয়ার ও স্টক হাতবদল হয়েছে মোট ৪১ কোটি ২৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকায়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানি ছয়টির মধ্যে রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলহাজ টেক্সটাইল, আনলিমা ইয়ার্ন ডাইং, ফু-ওয়াং ফুড এবং বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড। এই ছয় কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি সাত লাখ টাকারও বেশি। আর কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইস্ক্রিমের। এ দিন কোম্পানিটির আট কোটি ৮২ লাখ ৬৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের তিন কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, তিন কোটি ৫৪ লাখ ১৩ হাজার টাকার আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের, আনলিমা ইয়ার্ন ডাইংয়ের দুই কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার টাকার, ফু-ওয়াং ফুডের দুই কোটি পাঁচ লাখ ১৭ হাজার টাকা এবং বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের এক কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সবগুলো সূচকই বেড়েছে। সিএএসপিআই বেড়েছে ৯৭.৭৬ পয়েন্ট। আর সিএসসিএক্স ৬১.৬৭ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ৬.১২ পয়েন্ট বেড়েছে। ৫৮ লাখ তিন হাজার ৪৫৩টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড বেচাকেনা হয়েছে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ ৫৬ হাজার ২২১ টাকায়। যেখানে গত বৃহস্পতিবার দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সিএসইতে ২৩২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ১০১টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের।
আর প্রাতিষ্ঠানিক পর্যবেক্ষক রয়েল ক্যাপিটাল গতকালের বাজার পর্যালোচনায় বলছে, এক দিনের ব্যবধানে শেয়ার বেচাকেনা বেড়েছে ৩ শতাংশ। আর টাকায় লেনদেন বেড়েছে ৮.১ শতাংশ। সার্বিকভাবে মূলধন ফিরেছে ০.৫৬ শতাংশ। ১৯টি খাতের মধ্যে দর হারিয়ে লোকসানে রয়েছে সাতটি খাত এবং লাভে ছিল ১২টি খাত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা