১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


সূচকের মৃদু পতনেও বেচাকেনায় উত্তাপ

-

- আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংক ব্লক মার্কেট গরম করে রেখেছে
- সিএসইতে এক দিনে ১০২ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে রেকর্ড

অস্থিরতা যে পুঁজিবাজারের চরিত্র তা আবারো গতকাল দেখালো। কয়েকদিন সূচক, শেয়ার দর বাড়িয়ে লেনদেন হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে দিয়ে আবার পতনে পা বাড়াল। সূচকের মৃদু পতনেও বেচাকেনায় বেশ উত্তাপ ছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা আশা জাগিয়ে আবার হতাশায় ফেলল। প্রথম ৩০ মিনিট বা আধঘণ্টায় আড়াই শ’ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বেচাকেনা হয় ডিএসইতে। তবে এ দিন ডিএসইর সবগুলো সূচকই কিছুটা পয়েন্ট খুইয়েছে। তবে চট্টগ্রাম স্টকের সবগুলো সূচক নতুন করে পয়েন্ট পেয়েছে। ডিএসইতে বাজারমূলধন ফিরেছে ৯৩ কোটি টাকা। আর সিএসইতে হঠাৎ ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার বিশাল বেচাকেনা। যা আগের দিনে তুলনায় ১০২ কোটি টাকারও বেশি। তবে আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার ব্লক মার্কেটকে গরম করে তুলেছে। গতকালও ছয় কোটি ৪৫ লাখ শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে তাদের। সামান্য এই সূচক হারানোকে ডিএসই সংশ্লিষ্টরা সংশোধন বলে দাবি করছেন। তারা বলছেন, এটুকু সংশোধন হতে পারে বাজারের।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের প্রথম আধঘণ্টায় প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্টের বেশি বৃদ্ধি পায়। পরে কমতে থাকে। আর দাম বৃদ্ধির তালিকায় তখন স্থান করে নেয় ২৫০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান। ওই সময় লেনদেন হয় ২৫০ কোটি টাকার বেশি। পতনেও প্রায় পাঁচ ডজন কোম্পানির শেয়ার ছিল ক্রেতাশূন্য। ডিএসইএক্স ১.৭৩ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৭২৫.২৭ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৬.৪৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৫৫.০২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪০.৩৭ পয়েন্টে।
এ দিন ডিএসইতে ৩৯ কোটি ৮০ লাখ ১৯ হাজার ১১৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে মোট এক হাজার ১০৮ কোটি ৩৪ লাখ ১৫ হাজার টাকায়, যা আগের দিনের চেয়ে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বেশি। যেখানে সোমবার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১টির, দর কমেছে ২২২টির বা ৫৬.৩৪ শতাংশের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির। এখানে দরপতনের শিকার ১২৪টি এ শ্রেণীর শেয়ার।
ব্লক মার্কেটে ১০১ কোটি টাকার ট্রেড : এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। এসব কোম্পানির সাত কোটি ৪৫ লাখ ১২ হাজার ৪৫১টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১০১ কোটি ৯২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ছয় কোটি ৪৫ লাখ শেয়ার ৪২ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া বেক্সিমকোর ২৪ কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৮২ হাজার টাকার, পূবালী ব্যাংকের চার কোটি ৭৬ লাখ টাকার, সোনালী আঁশের চার কোটি ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকার, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের দুই কোটি ৫৭ লাখ ৪২ হাজার টাকার, আইসিবি সোনালী ওয়ান মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দুই কোটি দুই লাখ ৮০ হাজার টাকার, ব্যাংক এশিয়ার দুই কোটি দুই লাখ ১০ হাজার টাকার এবং বিচ হ্যাচারির এক কোটি ৮০ লাখ চার হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই ১০ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকারও বেশি।
সিএসইতে হঠাৎই ১১৫ কোটি টাকার ট্রেড : অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ছিল ইতিবাচক। গতকাল সিএসইর লেনদেনে ছিল বিরাট লম্ফ। দুই কোটি ১৮ লাখ পাঁচ হাজার ৬১১টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১১৫ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ১০৭ টাকা বাজারমুল্যে। যেখানে আগেরদিন সোমবার লেনদেন হয়েছিল মাত্র ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ফলে গতকাল লেনদেন বেড়েছে ১০২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এই লেনদেন সাম্প্রতিককালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১১টির, দরপতনে ১১৩টি এবং দর অপরিবর্তিত ২০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট। সূচকের মধ্যে সিএএসপিআই ৩৪.৪৯ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ২২.৪৯ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ৪৯.৬৯ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। বাজারমূলধন বেড়ে এখন সাত লাখ ৪৪ হাজার ১২৩ কোটি আট লাখ টাকায়।
এখানে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, পূবালী ব্যাংক ও জেএমআই হসপিটালের শেয়ার। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকার, পূবালী ব্যাংকের ৩৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার এবং জেএমআই হসপিটালের ১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। এই তিন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি চার লাখ টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement