একটা দীর্ঘ সময় পর দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের উত্থান দেখা দিলো। বিভিন্ন সঙ্কট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানো বাজারে সূচকে তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও লেনদেন প্রায় এগারো শ’ কোটি টাকা স্পর্শ করেছে। হারিয়ে যাওয়া পয়েন্টগুলো প্রতিদিনই কিছু কিছু করে সূচকে যুক্ত হতে শুরু করেছে। ডিএসইতে গতকাল ক্রেতা ছিল বিক্রেতার দ্বিগুণ। কেনার চাপ ছিল ৮২ শতাংশ। ৪১ কোটির বেশি শেয়ার ও ইউনিটি ঢাকা স্টকে হাতবদল হয়েছে। তবে চট্টগ্রামে টাকায় লেনদেন কমেছে। বস্ত্র, রিয়েলস্টেট, মিউচুয়ালফান্ড, জ্বালানি, ট্যানারি, টেলিকম, আইটি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিমেন্ট, সিরামিক্স খাতের শেয়ার কেনার চাপ ছিল।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজারবিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের ৩৪ মিনিটের মাথায় অর্থাৎ ১০.৩৪টায় সব সূচকই নিচের সর্বনি¤েœ নেমে আসে। পরে বেচাকেনার চাপে এবং দর বৃদ্ধিতে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। যা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৪.৯৫ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৭২৭ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ১০.৫১ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৬১.৫০ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩.৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৬.৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ৪১ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৯টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড ডিএসইতে এক হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। গত রোববার লেনদেন হয়েছিল ৮১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। ফলে লেনদেন ২৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বেড়েছে।
লেনদেনে অংশ নেয়া ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৫২টির বা ৬৩.৬৩ শতাংশে, কমেছে ৮৬টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির। চাঙা ভাব ফিরে আসা এবং লেনদেন হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করায় বাজারমূলধন ০.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। চার হাজার ৯৩ কোটি টাকা বাজারে ফিরেছে।
ব্লক মার্কেটে ১৩৭.৬৮ কোটি টাকার ট্রেড : আর ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৪৮টি কোম্পানি গতকাল লেনদেনে অংশ নিয়েছিল। এসব কোম্পানির ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৫৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ১৩৭ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১২ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার ৪৪৯টি শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৮৩ কোটি ৬ লাখ ৯১ হাজার টাকায়। এ ছাড়া লাভেলো আইসক্রিমের ৮ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকার, আলহাজ টেক্সটাইলের ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার টাকার, সোনালি আঁশের ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকার এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের ৪ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকারও বেশি।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব সূচকই নতুন করে পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। সিএএসআইপি ১২৯.৭৮ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ৭৬.৮৯ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ২৪.২৭ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে গতকাল। আর ৪৭ লাখ ৬৩ হাজার ১১৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ১২ কোটি ৮৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯৪ টাকায় হাতবদল হয়েছে।
রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। ফলে এখানে লেনদেন কমেছে। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৬টির, কমেছে ৫৮টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টির।
প্রাতিষ্ঠানিক পর্যবেক্ষক রয়েল ক্যাপিটাল বলছে, ঢাকার পুঁজিবাজারে গতকাল শেয়ার কেনার চাপছিল। কিন্তু বিক্রেতা ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ। তবে বেচাকেনায় ছিল না ১৯ শতাংশ। এখানে বি শ্রেণীর শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল। ১৯টি খাতের মধ্যে ১৬টি খাত ছিল লাভে।