১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পুঁজিবাজার উত্থানেও বিনিয়োগকারী ১৫ কোম্পানির শেয়ার কিনতে ব্যর্থ

-

- বাজারমূলধনে ফিরেছে তিন হাজার ২৭০ কোটি টাকা
- দুই ডজন কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতাশূণ্য

ঊর্ধ্বমুখী দেশের পুঁজিবাজার। আশার আলো দেখাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। তারপরও একডজন কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতা নেই, শুরুতে কেনার চাপ ছিল। প্রায় ৬৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর বাড়লেও ১৫টি কোম্পানি বড় দাপট দেখিয়েছে। লেনদেনের বেশির ভাগ সময় এই ১৫ প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। অন্যদিকে দিনের সর্বোচ্চ দামে ওই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিপুল পরিমাণে ক্রয়ের আদেশ আসে। সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করায় কিনতে পারেনি শেয়ার। আবার নতুন নিয়মের কারণে দুই ডজন কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা ছিল না। প্রথম সোয়া ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৫৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকার এবং সিএসইতে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। সূচক ও দর বৃদ্ধির কারণে বাজারে তিন হাজার ২৭০ কোটি টাকা ফিরেছে।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তিনটি প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষক বলছে, দৈনিক লেনদেন টাকায় বেড়েছে ১৫.০৮ শতাংশ এবং শেয়ার বিক্রি বেড়েছে ৫.৫৭ শতাংশ। একদিনে মূলধন বেড়েছে তিন হাজার ২৭০ কোটি টাকা বা ০.৪৬ শতাংশ। তবে গত এক মাসে বাজারমূলধন বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশ। তবে গত এক বছরে কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ তারল্য। বাজারে ১৯টি খাতের মধ্যে ১৫টি খাত লাভবান হয়েছে গতকালের লেনদেনে। তবে চারটি খাত বিশেষ করে সিমেন্ট, তথ্য প্রযুক্তি, চামড়া ও ভ্রমণ খাত লোকসানে ছিল। ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের শেয়ার গতকাল ২৭.৩ শতাংশ উচ্চ লাভে ছিল। এ ছাড়া লাভে ছিল বস্ত্র ১২.৮ শতাংশ ও প্রকৌশল খাতের ১০.৪ শতাংশ শেয়ারগুলো।
ডিএসইর তথ্য থেকে দেখা যায়, দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখানো ১২ কোম্পাানির পাশাপাশি আরো অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের ওপর বেড়েছে। ফলে বড় উত্থান হয়েছে সব কয়টি মূল্যসূচকের। সেই সাথে ডিএসই এবং সিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দাপটে থাকা কোম্পানিগুলো হলো, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট নিটিং, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, ফার কেমিক্যাল, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, প্রিমিয়ার ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, মিথুন নিটিং, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সাইফ পাওয়ার এবং কোহিনুর কেমিক্যাল।
দুই ষ্টকের লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, শুরুর দিকে বাজারের ইতিবাচক গতিটা স্লো ছিল। পরে বাড়তে থাকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৭৬.৪১ পয়েন্ট বেড়েছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৮.৫৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৫.৫৯ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৪০১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৯টির বা ৬৫ শতাংশে। আর দর পতনের শিকার ৯৮টি কোম্পানি এবং দর অপরিবর্তিত ৪৪টি। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ১০টির এবং দর অপরিবর্তিত ১৩টির। বিশ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড বেচাকেনা হয়েছে ৮১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৯ টাকায়। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ১০৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা বা ১৫.০৮ শতাংশ।
এদিকে, ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৪টি কোম্পানির ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৩২১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে যার বাজারমূল্য ছিল মোট ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোনালী আঁশের। এদের এক লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৫টি শেয়ার ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। এ ছাড়া আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার এবং তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি ৫ কোটি ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই তিন কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকারও বেশি।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবগুলো সূচকই গড়ে এক শ’ পয়েন্ট হারে বেড়েছে। সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে ১৮০.৭৩ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১০৮.৯২ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ৯৭ পয়েন্ট বেড়েছে। এক কোটি ২৬ লাখ ৫৬ হাজার ১০৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে যার বাজারমূল্য ছিল ৩৮ কোটি ৪৩ লাখ ২৫ হাজার ২৪ টাকা। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। ফলে লেনদেন বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টির, কমেছে ৭০টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টি কোম্পানির।


আরো সংবাদ



premium cement