১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লাগামহীন দরপতন : পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

-

- ক্রয় চাপ ৫৪ শতাংশ : বিক্রির চাপ ৪৬ শতাংশ
- ১৫টি খাতের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লোকসানে

লাগামহীন দরপতনে দেশের পুঁজিবাজার। লোকসানে রয়েছে ১৯টি খাতের মধ্যে ১৫টি খাতের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর। শেয়ারের সাথে বেশির ভাগ মিউচুয়াল ফান্ড দর হারিয়ে চলছে। দরপতনের ফলে ক্রয় চাপ বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। বিক্রির চাপ কমেছে। ক্রেতা থাকলেও এন শ্রেণীর শেয়ারের কোনো বিক্রেতা নেই। লেনদেনের পরিমাণ তিনশ’ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। পুঁজি হারিয়ে চরম হতাশায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা বলছেন, এই ধারাবাহিক পতনে কত হাজার পরিবার যে পুঁজি হারিয়ে পথে বসছে, অথচ কর্তপক্ষের কোনো পদক্ষেপ নেই। তারা শুধু বিনিয়োগকারীদের দুষেই যাচ্ছেন।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পেেয়ন্টে। ত্রিশ কর্মদিবসের মাথায় সূচক ৬৮৫ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ৫ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে নেমেছে। এই ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে মাত্র চার কর্মদিবস সূচক ইতিবাচক ছিল। বাকি ২৬ কর্মদিবসই সূচক লাগামহীন পতনে ছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসইএক্স সূচক ২২.৯৮ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৭৩৮.৩৭ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৬.৩১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৪৫.৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৬১ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১.৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে গতকাল ১১ কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৮২টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড মোট ৩৬৭ কোটি ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৮ টাকায় হাতবদল হয়েছে। সোমবার লেনদেন হয়েছিল ৪৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকার। ফলে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে ১০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ২৬৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।
এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৩২টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। গতকাল ৪৭ লাখ ৫৩ হাজার ৯২৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে ২৯ কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকায়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। এই পাঁচ কোম্পানির মধ্যে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের আট কোটি ১৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মা তিন কোটি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের তিন কোটি ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকার এবং সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল ৩৪ লাখ ২০ হাজার ২৪৫টি শেয়ার মিউচুয়াল ফান্ড মোট ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল আট কোটি ১৬ লাখ টাকার। সবগুলো সূচকই পতনে ছিল। সিএএসপিআই ৭৪.৪২ পয়েন্ট কমে ১৬ হাজার ৪৩৭.২৪ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ৪২.৯৬ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৮৮৩.৬৬ পয়েন্টে এবং সিএসই-৩০ সূচক ৫৮.২৮ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১২ হাজার ৫৯৬.৫৫ পয়েন্টে রয়েছে। সিএসইতে ২০৫টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ১২৮টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের।
লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯টি খাতের মধ্যে গতকাল মাত্র চারটি খাত লাভে ছিল। আর ১৫টি খাতই লোকসানে। লাভে থাকা চারটি খাত হলো- ব্যাংকিং, প্রকৌশল, খাদ্য ও টেলিকম। ঢাকাতে ৩৮ শতাংশ ছিল বিক্রেতা এবং ৫২ শতাংশ ছিল ক্রেতা। তবে শেয়ার কেনার চাপ ছিল ৫৪ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement