১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ভাগিনার বিরুদ্ধে খালাকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা, প্রত্যাহারে দাবিতে মানববন্ধন

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বরগুনার পাথরঘাটায় খালাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ভাগিনা কাওসার (২০)-সহ আটজনের বিরুদ্ধে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে খালা সামিহা ইসলাম ঐশী (১৮)। ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা সাইক্লোন শেল্টার বাজারে এ কর্মসূচি করে তারা।

এর আগে, বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন খালা সামিহা ইসলাম ঐশী। সামিহা ইসলাম ঐশী কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা এলাকার মো: শফিকুল ইসলামের মেয়ে।

স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মোতালেব মিয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো: আইয়ুব আলী, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন সোহাগ, সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম ছগির, কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা আব্দুল কাদের।

জানা যায়, ১৮ জুন বাধন সিকদার নামের এক হিন্দু যুবকের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় সামিহা ইসলাম ঐশিকে দেখে ফেলে এলাকাবাসী। বিষয়টি ঐশির খালাত ভাই মামুনকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক বাধন শিকদারকে চড়-থাপ্পর দেন এবং ঐশীকে দিয়ে জুতাপেটা করান। ওই ঘটনা বেশ কিছু ইউৎসুক জনতা মোবাইলে ধারণ করে। মোবাইলে ভিডিও করাকে কেন্দ্র করে আব্দুল্লাহ নামে এক যুবককে দোকানের মধ্যে আটকেয়ে মারধর করেন মামুন। এরপর ওই ঘটনাকে অন্যদিকে মোর ঘুরাতে গত ৩ জুলাই বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

ঐশীর খালাত বোন নাজমা বেগম দাবি করেন, ‘খালা মুন্নি এবং খালাত বোন একই স্বভাবের লোক। দীর্ঘ বছর ধরেই বিভিন্ন পরপুরুষের সাথে মেলামেশা করে। তাদের জন্য এলাকায় লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। গত ১৮ জুনের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমার ছেলে কাওসার হাওলাদার শুভকে ১ নম্বর আসামি দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেছে। এমনকি এ মামলা দিয়ে এলাকার কুরআনের হাফেজ ও শিক্ষার্থীরাও বাদ যায়নি।’

মানববন্ধনে উপস্থিত কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আইউব আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হোসেন বলেন, ‘কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অসামাজিক কার্যক্রম চলাকালে তার মেয়ে সাথে এক হিন্দু ছেলের বস্ত্রহীন অবস্থায় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে। এই ঘটনা থেকে বাঁচতে ওই পরিবারটি এলাকাবাসীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তবে ওই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে তিন শতাধিক এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে মিথ্যা মামলার আসামিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাই আমরাও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ওই মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ও এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরের পক্ষে রয়েছি।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা কলেজে যাওয়া আসার পথে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সামিহা ইসলাম ঐশীকে কাওসার হাওলাদার কুপ্রস্তাব দিতেন। এতে সামিহা ইসলাম ঐশী রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। গত ১৮ জুন সকাল ১০টার দিকে আট থেকে ১০ জন লোক নিয়ে সামিহা ইসলাম ঐশীর বাড়িতে ঢুকে কাওসার হাওলাদার ও মো: আব্দুল্লাহ সামিহা ইসলাম ঐশীকে বস্ত্রহীন করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। অপর লোকজন ভিডিও ধারণ করে। এবং বাঁধন সিকদারের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সকল ঘটনা তার ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে ঐশীর বাড়িতে গেলে তাদের ঘর তালা বদ্ধ পাওয়া যায়। মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

ঐশী খালত ভাই মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি জানান, এটা তাদের পারিবারিক বিষয়, তারা নিজেরাই বিষয়টি বুঝবেন।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আল মামুন বলেন, ‘শুনেছি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। জানতে পেরেছি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ এলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করব।’


আরো সংবাদ



premium cement