মির্জাগঞ্জে পায়রার ভাঙ্গনের মুখে প্রাথমিক বিদ্যালয়
- উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)
- ২৯ জুন ২০২৪, ১৬:৩৭
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পিপঁড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পায়রার ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় অন্যত্র সরিয়ে নেয়ায় ব্যপারে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ২৪ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরের প্রতিষ্ঠান প্রধানের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় ভবনটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার রক্ষা ও পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য এবং বিদ্যালয়টি অন্যত্র স্থানান্তরে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট্য কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের ভবন পায়রা নদী গর্ভে চলে গেলে স্থানীয় দ্বন্দ্ব ও জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে গত চার বছর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের পাঁকা ভবন নির্মিত ব্যহত হওয়ার জটিলতা দেখা দেয়। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পায়রা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট্য একটি টিনশেড ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
এছাড়া পায়রা নদী তীরবর্তী একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গনের ঝুকিঁর মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে টিনশেড ঘরটিও যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন প্রধান শিক্ষক। পায়রা নদী থেকে বিদ্যালয়টি ছয় থেকে সাত ফুট ফুট দূরে রয়েছে। বিদ্যালয়ের নেই কোনো বিদুৎ ব্যবস্থা। এতে শিক্ষার্থীরা জিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থায় পিছিয়ে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের পিপঁড়াখালী গ্রামে বিদ্যালয়টি ১৯২৬ সালে প্রতিষ্টা করা হলে তা ১৯৮৮ সালে এডিপির মাধ্যমে পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় এবং ২০১৮ সালে পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে যায় ভবনটি। এ বিদ্যালয়ে সাতজন শিক্ষককের স্থানে প্রধান শিক্ষকসহ কর্মরত আছেন তিনজন শিক্ষক। প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়সহ অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। দুইজন শিক্ষক দিয়ে চলছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪১ জন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টালগ্নের সময়ে পূর্বদিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার জমি এবং মানুষের বসতঘড় ছিল। কিন্তু পায়রা নদীতে আস্তে আস্তে সব বিলীন হয়ে গেছে। পায়রা নদীর তীরবর্তী এবং দুর্গম এলাকা বিধায় কোনো শিক্ষক এখানে আসতে চায় না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সব সময়ে ভয়ে ভয়ে ক্লাশ করতে হয়। কখন যেন নদীতে বিলীন হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সামনে পায়রা নদীর পাড় হঠাৎ করে ভেঙে যায়। বেশি কষ্ট হয় বর্ষার সময়ে তখন চলাচল করাই দায় হয়ে যায়। নেই খেলার মাঠ। আমাদের এখানে একটি বিদ্যালয় ভবন নির্মান হলে সকল শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো।
অভিভাবকরা বলেন, পায়রায় ভাঙ্গনের কারণে জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে এখানকার বহু পরিবার। নদীতে মাছ ধরে ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা ও আমাদের জীবন চলে। ছেলে-মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়েও ভয়ে থাকতে হয়। এখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মান বাড়বে এবং নদী তীরবর্তী মানুষ ঝড়ের সময়ে আশ্রয় নিতেও পারবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু সুজিৎ মজুমদার বলেন, বিদ্যালয়টি পায়রার ভাঙ্গনে গত ২০১৮ সালে ভেঙে যায়। এরপর ছোট্ট একটি টিনশেড ঘরে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। স্থানীয় কিছু জটিলতা ও বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য জমি নিয়ে জটিলিতা দেখা দেয়ায় নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। ঘূর্ণিঝড় রেমালে পর পায়রা নদীর ভাঙ্গন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। এদিকে পায়রার ভাঙ্গনের কারণে পিপঁড়াখালী বাজারসহ গ্রামটি সম্পূর্ন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও এই নদী ভাঙ্গনের কারণে এ এলাকার বহু লোক তাদের ভিটাবাড়ি ও জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: রিয়াজুল হক বলেন, বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার পরে নতুন ভবন বরাদ্ধ হয়েছিল। স্থানীয় জটিলতার কারণে ভবন নির্মান হয়নি। বরাদ্ধ এলেই বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের মুখে পড়ায় ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিদ্যালয়টি সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর ও দ্রুত মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে এবং পাশের একটি মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে। পরে সুবিধাজনক জমি পাওয়া গেলে সেখানে বিদ্যালয়টি পূনঃস্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা