১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লালমোহনে আম চাষ করে হোসেনের বাজিমাত

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বরিশালের দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরউমেদ গ্রামের বেপারী বাড়ির আলহাজ্ব মো: জালাল আহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন নিজ বাড়ির আঙিনায় আম চাষ করে সফল হয়েছেন। এক কথায় আম চাষে হোসেনের বাজিমাত।

জানা গেছে, নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গত চার বছর ধরে চাষ করলেও চলতি মৌসুমে তার বাগানে সর্বোচ্চ আমের ফলন হয়েছে। বাড়ির আঙিনাসহ ১৬০ শতাংশ জায়গাজুড়ে তার আম বাগানে রয়েছে আট প্রকার (জাতের) আম।

তার বাগানে রয়েছে, ব্যানানা ম্যাংগো, গৌড়মতি, হাঁড়িভাঙ্গা, হিমসাগর, ফোর কেজি, রুপালি, ফজলি ও কাটিমোন জাতের আম চাষের মাধ্যমে চমক ও বাজিমাত দেখিয়েছেন তিনি।

মোহাম্মদ হোসেন বলেন, শের-ই-বাংলা কৃষি ইউনিভার্সিটির নার্সারি থেকে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী ও অস্ট্রেলিয়ান আপেল কুল জাতের বরইয়ের চারার পাশাপাশি ওই খামারেই এ আট প্রকার (জাতের) আম চাষ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে আমার বাগানের ১৬০ শতাংশ জমিতে ১৩৭টি আম গাছ রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।’

ইতোমধ্যে মৌসুমের শুরুতেই প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার আম বিক্রি করেছেন তিনি। প্রতি কেজি আম জাত ভেদে বিভিন্ন দামে পাইকারি এবং খুচরা বিক্রি করেন বলেও জানান তিনি।

তবে, ব্যানানা ম্যাংগো ১৩০ টাকা, হিমসাগর, রুপালি ও হাঁড়ি ভাঙ্গা গড়ে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেন।

হোসেন আরো বলেন, বাগানে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে, তাতে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। একই বাগানে গত মৌসুমে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছেন।

তিনি আরো জানান, ‘আমার আম বাগানে চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। তাদের দৈনিক মজুরি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া কীটনাশক, সার ও সেচ খরচসহ সব মিলিয়ে বরই ও আম বাগান মিলিয়ে ২৮ থেকে ২৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার মধ্যে শুধু আম চাষে খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তবে, আশা করছি, এ মৌসুম শেষে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারব।

এ বছর বাগানের জমির পরিমাণ আরো বাড়ানো হয়েছে। ওই খানে মাল্টা, আপেল, লিচু, কালো জামসহ বিভিন্ন ফল গাছের চারা বা কলম লাগিয়েছি। আমের পরে মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান হোসেন।

হোসেন আরো বলেন, কৃষি অফিসের কোনো সহযোগিতা তো দূরের কথা কোনো পরামর্শও পাইনি। যদি কৃষি অফিসের পরামর্শ পাইতাম তাহলে আরো বেশি লাভবান হতে পারতাম আমি।

তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আমগুলো ফরমালিনযুক্ত যা মানবদেহের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। আমি আমার বাগানের আমগুলো ফরমালিন ছাড়াই বিক্রি করছি, যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী স্বাস্থ্যসম্মত। ফরমালিন-মুক্ত থাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মানুষ ক্রয় করে এবং বেপারিরা এসে বাগান থেকে আম ক্রয় করে নিয়ে যায় বিক্রি করার জন্য।

লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আবু হাসনাঈন দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি ওই খামারে দু’বার গিয়েছি, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি। যদি আম চাষে তার কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হয় তাহলে আমার সাথে বা উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে সকল ধরনের পরামর্শ দিব।


আরো সংবাদ



premium cement