১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু মধ্য রাতে, চিন্তিত জেলেরা

বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু মধ্য রাতে, চিন্তিত জেলেরা - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশের সামুদ্রিক পানিসীমায় মাছের প্রজনন, মাছের বংশ বিস্তার বাড়াতে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আজ রোববার মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। এ কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ার দুশ্চিন্তায় সমুদ্রগামী হাজার হাজার জেলে।

২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

এসব জেলেরা বলছেন, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন ধাপে ১৪৭ দিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় জেলে পরিবারসহ ব্যবসায়ীদের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। জেলেরা সরকারিভাবে যে সহায়তা পান, তা সামান্য। ফলে তাদের জীবন কাটে চরম দুর্দশায়। মা ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিল ৬০ দিনের অভয়াশ্রমের শেষ হতে না হতেই আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। এই ১৪৭ দিন ছাড়া ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় আট মাসের নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য সম্পাদ মন্ত্রণালয়।

সেখানে বলা হয়েছে, সামদ্রিক জলসীমায় মাছের বংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন, সামদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

সাতভাই ফিসের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, পটুয়াখালীর সবচেয়ে বড় দুটি মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর। এখান থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ চালান হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে গত কয়েক বছর ধরে বছরে দু’বার নিষেধাজ্ঞা, বৈরি আবহাওয়া, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধি। সব মিলিয়ে এই পেশা এখন হুমকির মুখে।

ট্রলারের মালিক বাহাদুর বলেন, কোম্পানির কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা দাদন নিয়ে একটা ট্রলার তৈরি করেছি। দুই বছরে এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি। এর ওপর আবার অবরোধ, এখন এই পেশায় টিকে থাকা আমাদের মতো মানুষের পক্ষে সম্ভব না।

জেলে মাঝি কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি দাবি করে আসছি ৬৫ দিনের অবরোধকালে আমরা মাছ ধরা বন্ধ রাখলেও পার্শ্ববর্তী ভারতীয় জেলেরা আমাদের দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে। কিন্তু সরকার এখনো এর কোনো প্রতিকার করতে পারল না। আমাদের দাবি, এই সময়ে আমাদেরও মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হউক, অন্যথায় অবৈধভাবে ভারতীয় জেলে ট্রলারগুলো বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ বন্ধ করা হোক।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলেদের ঋণসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও চলছে।

তিনি আরো বলেন, মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রজনন সুবিধায় যাতে মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। আর অপরটি হলো ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। যার জন্য বর্তমানে বড় আকারের ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। এবার আমাদের নিষেধাজ্ঞা সফল হবে।


আরো সংবাদ



premium cement