১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঝড়ে পড়ে যাওয়া মাদরাসা ঘর এক মাসেও মেরামত হয়নি

ঝড়ে পড়ে যাওয়া মাদরাসা ঘর এক মাসেও মেরামত হয়নি - ছবি : নয়া দিগন্ত

দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার পূর্ব চরউমেদ আহম্মদিয়া দাখিল মাদরাসার টিনসেট ঘরটি কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে যায়। এতে করে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ আহম্মদিয়া দাখিল মাদরাসাটি ১৯৭৫ ইংরেজি সনে একটি দু’চালা টিনসেট ঘর নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ওই সময়ের নির্মানাধীন টিনসেট ঘরটিতে আজো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রতি বছর শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সহযোগিতার (চাঁদার মাধ্যমে) মাধ্যমে ওই টিনসেট ঘরটি মেরামত করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মান্দাতার আমলের সেই পুরোনো টিনসেট প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে নিয়মিতভাবে। কিন্তু গত মাসের ৭ এপ্রিল আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে প্রতিষ্ঠানটির চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। বিধ্বস্ত হয়ে ধুমড়ে মুচড়ে পড়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এতে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে ওই মাদরাসাটি। বেঞ্চ, হাইবেঞ্চ ও ভেঙে যায়। বর্ষার মৌসুমে শিক্ষার্থীদের পাঠ দানে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক মিলনায়তনের নাজুক অবস্থা।

প্রতিবছর প্রায় শতভাগ জেডিসি ও দাখিল পাশ করা এ প্রতিষ্ঠানটির সুপার মাওলানা মো: অলিউল্যাহ দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট দফতরে কয়েকবার আবেদন করেছি অদ্যবদি কোনো ব্যবস্থা হয়নি। আবার কালবৈশাখী ঝড়ে প্রতিষ্ঠানটি বিধ্বস্ত হয়ে পরে যায় গত মাসের (৭ এপ্রিল) দুপুরে। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষ।

এতে করে ১০ম শ্রেণির পাঠ দান কার্যক্রম করানো হচ্ছে তিনটি কক্ষে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত ও জরাজীর্ন প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন রমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা মিয়া। দু’চালা বিশিষ্ট টিনসেট মাদরাসা ঘরটি এখন পরিত্যাক্ত প্রায়। দরজা, জানালা এমনকি বেঞ্চ, হাইবেঞ্চের নাজুক অবস্থা, গত ২৮ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি খোলা হয়েছে। রমজান ও ঈদুল ফিতরের বন্ধের পর খোলা তারিখে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের অর্থ নৈতিক ফান্ড না থাকায় মেরামতের উদ্যোগ নিয়েও ব্যার্থ হয়েছেন শিক্ষকরা। এমনটি জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক।

দীর্ঘ কয়েক বছর বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে খুব কষ্ট পোহাতে হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক মো: জসীম উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ভূইয়া, মো: মোস্তফা মিয়া, মো: মফিজুল ইসলাম, মো: ফিরোজ মিয়া প্রমুখ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ এক মাস বিধ্বস্ত হওয়া প্রতিষ্ঠানটি আজো মেরামত না করায় গাদাগাদি করে বসানো হচ্ছে আমাদের সন্তানদের। এতে ক্লাসে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাসে বসার কোনো পরিবেশ নেই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক ও সচেতন মহলের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন মাদরাসাটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থাসহ নতুন একটি পাকা ভবনের ব্যাবস্থা করেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের লালমোহনের দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী মো: মনির হোসেন বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের সুপার এমপি মহোদয়ের ডিওলেটার নিয়ে শিক্ষা অধিদফতরে একটি আবেদন করতে হবে তার পর ব্যবস্থা হবে।

এ ব্যাপারে লালমোহন উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই মাদরাসাটির পক্ষে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি শীগ্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement