পিরোজপুরে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ১৮ সদস্য গ্রেফতার

পিরোজপুরে জুড়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। এ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা ও এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছোট-বড় গ্রুপে ভাগ হয়ে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এদের শক্ত হাতে দমনের জন্য ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছে। পিরোজপুরে পৃথক দু’টি মামলায় দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ১৮ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার দুপুরে পিরোজপুর সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম আ্যান্ড অপস) মো: মুকিত হাসান খান।

গ্রেফতার হওয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলেন মো: লিমন হাওলাদার (১৫), জিসান (১৭), সয়ন রায় (১৬), বাকিদ ইসলাম (১৭), জাকারিয়া শেখ (১৬), মো: সাকিব হাওলাদার (১৬), শামীম সেখ (১৬), মো: হামজা এস্কাদার (১৪), মো: রিফাত মাহমুদ (১৭), শাহরিয়ার রাতুল (১৮), কাওসার মীধা (১৮), সাগর হাওলাদার (১৮), মো: মুন্না জমাদ্দার (১৮), মো: মফিজুল ইসলাম (৩০), মো: আমিরুল (২০)।

এছাড়াও পৃথক মামলায় রাতুল ইসলাম তুর্য (২০), দিব্য মৃধা (২০) এবং শান্তদত্তকে (১৯) অপহরণ, আটকে রেখে চাঁদা নেয়াসহ একাধিক অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম আ্যান্ড অপস) মো: মুকিত হাসান খান জানান, পিরোজপুর সদর থানা কিশোর গ্যাংয়ের ১৮ সদস্য হাতুরি-চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ আটক, ভিকটিমসহ ৩ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার এবং দু’টি মামলা হয়েছে।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পিরোজপুর শহরের কৃষ্ণচূড়ার মোড়ে এক গ্রুপের কিশোর অন্য গ্রুপের এক কিশোরকে একা পেয়ে ২০ থেকে ২৫ জন কিশোর তাদের সাথে থাকা লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি ও হাতুড়ি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হাত ভেঙ্গে ফেলে। পুলিশ সংবাদ পেয়ে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষন করে ঘটনার সাথে জড়িত ১৫ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যকে আটক করেন। তাদের কাছ থেকে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের মা মোসা: শিউলি বেগম (৪২) এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করেন। কিশোর গ্যাংয়ের বাকি সদস্য ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেফতারে অভিযানে অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে অন্য আরেকটি ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে এক কিশোর-কিশোরী বলেশ্বর নদীর পাড়ে একসাথে ঘুরতে গেলে কিশোর গ্যাং তাদেরকে একসাথে দেখে ধাওয়া করে। এ সময় একটি মেয়ের সাথে থাকা ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায় ও ছেলেকে জিম্মি করে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে তার পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তার পরিবার নিরুপায় হয়ে ৩ হাজার ১০০ টাকা চাঁদা দেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মো: লিয়াকত আলী সরদার (৪৫) পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ ভিকটিমকে রাজারহাট এলাকার শামিম ভিলার কাছ থেকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করে ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম আ্যান্ড অপস) মো: মুকিত হাসান খান আরো জানান, শহরের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সাধারণ জণগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকি সদস্য ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেফতারে অভিযানে অব্যাহত রয়েছে।