১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মন্তাজনগর স্কুলে শিক্ষক এলেও আসছে না শিক্ষার্থীরা

দোয়ারাবাজারে বন্যার প্রভাব
-

বন্যার পানির তোড়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের মন্তাজনগর স্কুলে যাতায়াতের সড়কটির ওপর দুটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় সড়ক পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুই কিলোমিটার সড়কের চারটি স্থানে ভাঙনের কারণে আরো চারটি গ্রামের লোকজন ও স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা এখন যোগাযোগ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্থ উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর-মন্তাজনগর, নছরনগর-নাছিমপুর সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, উপচানো পাহাড়ি খরস্রোতা চেলা নদী থেকে তীব্র বেগে পানি আসছে এবং ব্রিজ ও সড়কের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মানুষের যাতায়াতের সুবিধায় ভাঙা ব্রিজে দেয়া হয়েছে একটি বাঁশ। এতে প্রাপ্তবয়স্করা পার হতে পারলেও ছোট শিক্ষার্থীরা পড়ছে বিপাকে।
গত বুধবার সকাল ৯টায় দেখা গেছে, ভাঙা ব্রিজে বয়স্করা একজন আরেকজনের হাত ধরে পানিতে কিছুটা ভিজে পার হচ্ছেন। তবে সড়কে ওঠার সময় বাধে আরেক বিপত্তি। তখন উপর থেকে একজন হাত বাড়িয়ে না দিলে রাস্তায় ওঠা কঠিন হয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানান, দৌলতপুর-মন্তাজনগর, নছরনগর ও সৈয়দাবাদ এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র কাঁচা এ সড়কটি এবারে দুই দফা বন্যায় চার জায়গায় ভাঙন দেখা দেয়। মন্তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচ তলায় বন্যার পানি এখনো থই থই করছে। গত স্কুলে ১৭ জুন স্কুলে প্রথমবার পানি ওঠে। সেই থেকে এখনো পানিবন্দী রয়েছে স্কুলটি। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র উঁঁচু বেঞ্চর ওপর তুলে রাখা হয়েছে।
স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নাছিমা বেগম জানান, দুর্যোগের সময়েও শিক্ষকরা স্কুলে আসতেন। কিন্তু রাস্তা ও ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় অভিভাবকরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। পুরো এলাকা এখনো পানিবন্ধী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মন্তাজনগর স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা গেল, একপাশে নদী আর দুই পাশে হাওরে ঘেরা মন্তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, আরো দুই শিক্ষক, একজন শিক্ষিকা একটি নৌকায় করে স্কুলে এলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, কোথায়ও নৌকা, আবার কোথায় পানিতে ভিজে তারপরও স্কুলে এসেছি। তবে শিশুদেরকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা। মন্তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আনছার আলী বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার করে যাতায়াত স্বাভাবিক করার দাবি জানান স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্কুল কমিটির সভাপতি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়াজুর রহমান বলেন, এবারের দফায় দফায় বন্যায় স্কুলটির অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্কুলে আসার মুখে দুটি বড় ব্রিজে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাস্তা সংস্কার করা না হলে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতে সাহস করবেন না।


আরো সংবাদ



premium cement