১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লালমোহনে জরাজীর্ণ ২৭টি আবাসনের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে

লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের জরাজীর্ণ আবাসন : নয়া দিগন্ত -

দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার ২৭টি আবাসনে অন্তত এক হাজার ৯০০ পরিবার চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ আগের নির্মিত ঘরগুলো আজও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এসব আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ দিনমজুর, কেউ শ্রমিক, কেউ অটোরিকশা চালক, আবার কেউ জেলে। ২০০৩ সাল থেকে শুরু করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টিনশেড এসব আবাসন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কয়েক বছর পর থেকে আবাসনের ঘরগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়তে শুরু করে। বর্তমানে এসব আবাসনের ঘরের অবস্থা খুবই নাজুক।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লালমোহনের বদরপুর ইউনিয়নে চারটি আবাসনের ব্যারেক রয়েছে। যেখানের দু’টি আবাসনের ব্যারেক ইতোমধ্যে পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। বাকিগুলো জরাজীর্ণ। কালমা ইউনিয়নের আবাসনটিও জরাজীর্ণ। ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের তিনটি আবাসনের মধ্যে দু’টির কাজ নতুন করে করা হয়েছে। তবে এখনো একটি আবাসন জরাজীর্ণ। ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নেও তিনটি, পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নে ছয়টি, লালমোহন ইউনিয়নে একটিসহ রমাগঞ্জ ইউনিয়নের দু’টিও জরাজীর্ণ। সবচেয়ে বেশি আবাসনের ঘর রয়েছে উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে মোট আবাসন রয়েছে ১১টি। যেখানের সবগুলো ঘরই জরাজীর্ণ। এসব জরাজীর্ণ ঘরে বর্তমানে এক হাজার ৯০০ পরিবার বাস করছেন।
সরেজমিনে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়াখালী আবাসনে গিয়ে দেখা গেছে, আবাসনের প্রতিটি ঘরই জরাজীর্ণ। কোনো রকমে দিন পার করতে টিন শেড ঘরগুলোর ওপরে বাসিন্দারা দিয়েছেন তেরপাল এবং পলিথিন। তবে এ আবাসনের কেউ কেউ ধারদেনা করে নিজেরা ঘরগুলোকে মেরামত করে নিয়েছেন। আর বাকিরা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে।
ওই আবাসনের বাসিন্দা আবু মিয়া এবং সফিজল ইসলাম বলেন, আমরা অসহায় মানুষ। তাই ঘর দেয়া হয়েছে। তবে ঘরগুলো নির্মাণের পর থেকে বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হলেও মেরামত না করায় ঘরগুলো খুবই জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। ভাঙা টিনের ছাউনির ওপর তেরপাল এবং পলিথিন দেয়া হয়েছে। বেড়ার টিনগুলোও মরীচিকা ধরে ঝাজড়া হয়ে গেছে। এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তাই আবাসনের ঘরগুলো পুনঃনির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ জানান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আবাসনের টিন শেড এসব ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। তবে নির্মাণের কয়েক বছর পরও মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় ঘরগুলো এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে করে বাসিন্দারা ব্যাপক দুর্ভোগে রয়েছেন। তাদের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ৪৩৮টি ঘরের তালিকা পাঠিয়েছি। যার মধ্যে ১৬৩টি ঘরের বরাদ্দ পেয়েছি। ওইসব ঘরের কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। বরাদ্দ পেলে বাকি ঘরগুলোরও কাজ শুরু করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement