সুন্দরগঞ্জে ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দী
- রেজাউল ইসলাম সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
- ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
- বন্যার পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলো চর ডুবে যাওয়ায় শতাধিক বসতবাড়ি, হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বন্যার্তদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবা ও পশু খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে এ পর্যন্ত পানিবন্দী পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবার। পানিবন্দী পরিবারগুলো ইতোমধ্যে উঁচু স্থানে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে উঠে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে। গৃহপালিত পশুপাখি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু ও প্রসূতি নারীদের নিয়ে নিদারুণ কষ্টে রয়েছেন বন্যার্ত মানুষেরা। পানি বাড়ায় চরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলো চর ডুবে গেছে। বন্যা এলে তিস্তার শাখা নদীর আশপাশ ডুবে যাওয়ায় নদীভাঙন চলতে থাকে বছরব্যাপী। নদী পাড়ের মানুষের দাবি, স্বাধীনতা-পরবর্তী দীর্ঘ দিনেও স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি সরকার। যার কারণে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজার হাজার একর ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীতে।
কাপাসিয়া ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, চরের মানুষ গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন। হরিপুর ইউনিয়নের জহুরুল ইসলাম বলেন, এ ইউনিয়নের কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গোটা চরাঞ্চল এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। পানিবন্দী বেশির ভাগ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে। অনেক পরিবার ঘরের চকির উপর এবং টুইয়ের মধ্যে বসবাস করছে।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম জানান, গোটা ইউনিয়ন প্রায় ডুবে গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বন্যা দুর্গত মানুষের তালিকা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। বানভাসি মানুষের বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য, চিকিৎসা সেবার অভাব দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ওয়ালিফ মণ্ডল জানান, বন্যা কবলিত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ৪ হাজার ৯০০ পরিবারের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা