সবকিছু কাটিয়ে লাভের মুখ দেখার স্বপ্ন কর্তৃপক্ষের
- খাদেমুল বাবুল ও খাদেমুল ইসলাম জামালপুর
- ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
বৃহত্তর ময়মনসিংহের সর্ববৃহৎ কৃষিভিত্তিক চিনি ও খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দেওয়ানগঞ্জ জিল বাংলা সুগার মিলস্ লিমিটেড। এ অঞ্চলের বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এটি। এ শিল্পের সাথে জড়িত কৃষক, শ্রমিক ও চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের উন্নয়ন ও উন্নতি। তাই, তারা যেকোনো মূল্যে প্রায় শতবর্ষের গর্ব এ বৃহৎ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে চান।
এদিকে জিল বাংলা সুগার মিল কর্তৃপক্ষ অতীতের সব অনিয়ম কাটিয়ে ওঠে আগামীতে আখ মাড়াই মৌসুমে লাভের মুখ দেখার স্বপ্ন দেখছেন। মিল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য বেসরকারি মিল মালিকরা তাদের ইচ্ছামতো চিনির মূল্য বাড়িয়ে লাভবান হচ্ছেন। সরকারি সব সুগার মিল বন্ধ হলেই তারা খুশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আখ মাড়াই মৌসুমে জিল বাংলা সুগার মিল চাষীদের আখের যে মূল্য দেয় তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যে আখ কিনে গুড় মাড়াই করেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। অগ্রিম টাকাও দিয়ে থাকেন তারা। গুড় মাড়াই বন্ধ করতে গেলে তোপের মুখে পড়তে হয় মিল সংশ্লিষ্টদের। হামলার শিকারও হতে হয়েছে কয়েকবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও থাকেন তাদেরই পক্ষে। ফলে, সময়মতো পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতাও পাওয়া যায় না। যে কারণে প্রতিটি আখ মাড়াই মৌসুমে আখের সঙ্কট দেখা দেয় ঐতিহ্যবাহী কৃষিশিল্প জিল বাংলা সুগার মিলে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, এ সমস্যার সমাধানে আখের মূল্যবৃদ্ধি, উঠান বৈঠক, ব্যক্তিগতভাবে চাষিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করাসহ আখ চাষ বাড়ানোর সব চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
জিল বাংলা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান (এফসিএ) বলেন, গত মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমে এক হাজার ৩০৭ একর বেশি জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ আখ রোপণ মৌসুমে আখ রোপণ হয়েছিল তিন হাজার ৩৯৮ একর। অন্য দিকে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে আখ রোপণ হয়েছে চার হাজার ৭০৫ একর জমিতে। তবে চলতি মৌসুমে আখ রোপণে লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার একর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি চিনি শিল্প কারখানায় একজন চেয়ারম্যান ও ছয়জন পরিচালক থাকেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও সচিবকে ওই সব পদে যখন পদায়ন করা হয়, তখন তাদের চাকরির বয়স থাকে মাত্র ছয় মাস থেকে এক বছর। আখ চাষ সম্পর্কে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই শেষ হয়ে যায় তাদের চাকরির মেয়াদ। যে কারণে চিনি শিল্প, আখ চাষ উন্নয়ন ও সুগার মিলের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখার সময় ও সুযোগ থাকে না তাদের। জিল বাংলা সুগার মিলের লোকশানের এটি একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করে সূত্রটি।
এ ছাড়া প্রতিবছর মিলের যন্ত্রপাতি মেরামত ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যদি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেন, তবেই বৃহত্তম ময়মনসিংহের কৃষিভিত্তিক এই ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানটি আবারো লাভের মুখ দেখতে পাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
মিলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, গত মাড়াই মৌসুমে আখ চাষের জন্য তিনশ’ একর জমির প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান (এফসিএ) বলেন, এ যাবতকালে এ প্রথম আখের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত আখ মাড়াই মৌসুমে প্রতিমণ আখ-২২০ টাকায় ক্রয় করা হয়। আগামী মৌসুমে প্রতিমণ আখ ২৪০ টাকা মূল্যে চাষিদের নিকট থেকে ক্রয় করা হবে।
ঐতিহ্যরক্ষায় জিল বাংলা সুগার মিল রক্ষায় এ মিলটিকে বহুমুখী উৎপাদনের আওতায় আনার দাবি কৃষিনির্ভর এ অঞ্চলের মানুষের।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা