কুলাউড়ায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার শঙ্কা
- ময়নুল হক পবন কুলাউড়া (মৌলভীবাজার)
- ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
প্রথম দফার বন্যার পানি নামার আগেই ফের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে হাকালুকি হাওর ও মনু নদীর পানি বাড়তে থাকায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করছেন কুলাউড়ার পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ। অন্য দিকে গবাদিপশু নিয়েও পড়েছেন দুর্ভোগে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো পানিবন্দী থাকায় শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে পারছে না। এতে করে তাদের পড়ালেখায় বিঘœ ঘটছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন দাফতরিক কাজেরও বিঘœ ঘটছে। কর্মকর্তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। উপজেলা কৃষি অফিস, নির্বাচন, সাব-রেজিস্ট্রার, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, সমবায়, জনস্বাস্থ্য এবং পল্লী উন্নয়ন অফিস পানিবন্দী। তা ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পুরো ভবন পানিবন্দী। এখানকার আবাসিক এলাকার রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। কেউ কোনো যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারছে না। ফলে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
এ দিকে গত ২ সপ্তাহের অধিক সময় ধরে বন্যার পানিতে সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও উপজেলা প্রশাসনিক অফিসের আশপাশের আবাসিক এলাকা নিমজ্জিত থাকায় পানিবন্দী থেকে চিকিৎসাসেবা ও প্রশাসনিক কাজকর্ম করছেন বিভিন্ন দাফতরিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। এতে সরকারি অফিস ও হাসপাতালের সেবা গ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত শুক্র ও শনিবার বৃষ্টিপাত হলেও হাকালুকি হাওরসহ নদনদীর পানি কমা শুরু করেছিল। কিন্তু গত রোববার থেকে টানা ভারী বৃষ্টি হওয়ায় হাকালুকি হাওরসহ জেলার বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
১৭ জুন থেকে এখনো হাকালুকি হাওরের বন্যার পানিতে কুলাউড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে ডুবে আছে। ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার ৬৩ জন মানুষ ও উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে আছেন। এখানকার মানুষের বাসাবাড়িসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে আছে। বন্যার শুরু থেকে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন ত্রাণ নিয়ে। সরকারিভাবে নগদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৬২০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এ দিকে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় হাওর, নদীতীরবর্তী গ্রামের ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষ নিজ ভিটে ফিরতে শুরু করলেও গত দুদিন ধরে পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় আবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরছেন বানবাসী লোকজন।
এলাকাবাসী জানায়, হাকালুকি হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। জেলার নদীতীরবর্তী বন্যাকবলিত অন্যান্য এলাকায় কিছুটা উন্নতি হলেও অনেকটাই অপরিবর্তিত রয়েছে হাকালুকি হাওর তীরবর্তী এলাকা। চলমান পরিস্থিতিতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই ও গবাদিপশুর খাবার এবং বাসস্থান সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে বানভাসিরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, বন্যায় যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। উপজেলা পরিদষ প্রাঙ্গণ প্লাবিত থাকায় আমরা নিজেরা পানিবন্দী থেকে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা