পাবনার কৃষকদের সমৃদ্ধির দ্বার খুলে দিয়েছে পেঁয়াজ
- শফিউল আযম বেড়া (পাবনা)
- ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
পাবনার সুজানগর উপজেলার বিলগাজনা গ্রামের আব্দুল মালেক এখন একজন সচ্ছল কৃষক। অথচ বছর পাঁচেক আগেও এমন সচ্ছলতা ছিল না তার। দিনমজুরি করে কোনো রকমে তার সংসার চলাতো। পেঁয়াজ চাষই বদলে দিয়েছে আব্দুল মালেকের ভাগ্য। অন্যের জমি ইজারা নিয়ে কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজ চাষ করে এখন তিনি নিজেই দুই বিঘা জমির মালিক।
আব্দুল মালের মতো আরো অনেক কৃষকের সমৃদ্ধি ও সচ্ছলতার দ্বার খুলে দিয়েছে পেঁয়াজের আবাদ। ব্যাপক লাভের দেখা পাওয়ায় পাবনার বেড়া, সুজানগর, সাঁথিয়া ও ঈশ্বরদীর অনেক অসচ্ছল শ্রমিক ও ভূমিহীন কৃষক দিনবদলের এমন নজির স্থাপন করেছেন। পেঁয়াজই এখন এই এলাকার প্রধান ফসল। অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাবে এখানে শুধু উন্নতমানের পেঁয়াজই উৎপন্ন হচ্ছে না, বিঘাপ্রতি উৎপাদনের পরিমাণও অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি।
জানা যায়, ২৫-৩০ বছর আগেও পাবনা জেলায় এমন ব্যাপক হারে পেঁয়াজ আবাদ হতো না। সে সময় বেশির ভাগ জমিতে আবাদ হতো মসুর, গম, ছোলা, সরিষা, ধানসহ বিভিন্ন ফসল। পেঁয়াজ আবাদ হতো সীমিত আকারে। অন্য ফসলের তুলনায় পেঁয়াজ চাষে দুই-তিন গুণ বেশি লাভ হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন কৃষকরা। এখন পেঁয়াজই পাবনা জেলার দ্বিতীয় প্রধান ফসল। পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (খামারবাড়ি) সূত্র জানায়, এ বছর পাবনা জেলায় প্রতি হেক্টরে ১৪ দশমিক ২৫ টন হিসেবে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সাত লাখ ২৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ছয় হাজার ৩৭০ কোটি টাকা।
পাবনা জেলার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ দেশের প্রধান তিন পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলার নাম ফরিদপুর, পাবনা ও রাজশাহী। এর মধ্যে পাবনাই এখন দেশের সর্বচ্চ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা।
পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের বামনদি গ্রামের অবস্থান বিল গাজনার পাড়ে। বিল গাজনাজুড়ে অবস্থিত এ গ্রামের বিশাল ফসলের মাঠ বর্ষায় ডুবে যায় আর বর্ষা শেষে জেগে ওঠে পলিমাটির উর্বর স্তর। এলাকাবাসী মনে করে এ গ্রামের ফসলের মাঠই দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজের মাঠ। এখানে বিঘাপ্রতি ৫০-৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়। পেঁয়াজ চাষের কারণেই এ গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি।
পাবনার কাশিনাথপুর, বনগ্রাম, আতাইকুলা ও বেড়ার সিঅ্যান্ডবিতে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম পেঁয়াজ বেচাকেনার হাট। হাটবারে এসব হাট থেকে হাজার হাজার মণ পেঁয়াজ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। ব্যাপারীরা এসব হাট থেকে প্রতি হাটবারে ২৫-৩০ ট্রাক পেঁয়াজ ঢাকা, চিটাগাং, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়। তাই হাটগুলোতে গড়ে উঠেছে পেঁয়াজের বড় বড় আড়তঘর। আড়তদার, ব্যবসায়ীরা মিলে এসব হাটগুলো সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা