১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
নিলামে বিক্রি কমিউনিটি ক্লিনিক

মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের কাওয়াকোলা ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড

-

সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। যমুনার ভাঙনে ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের জালালপুর, গালা ও কৈজুরি ইউনিয়ন, সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নসহ নদীতীরবর্তী এলাকার পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়া বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভুক্তভোগীরা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনারচর এলাকার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড জেলার মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত একমাসের ভাঙনে দুই শতাধিক বাড়িঘর ও তিন হাজার একর চরাঞ্চলীয় ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড হাটবয়ড়া, দোগাছি, বড় কয়ড়া, ছোট কয়ড়া, চন্ডাল বয়ড়া, বেড়াবাড়ি, কৈগাড়ি, দোরতা ও বর্ণি গ্রামের আরো পাঁচ শতাধিক বাড়ি-ঘরসহ চার কিলোমিটার পাকারাস্তা, দুই কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে।
এ ছাড়াও দুই বছর আগে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বন্যা ও দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র মুজিব কেল্লা, ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীন প্রতি ব্যারাকে পাঁচটি পরিবার বসবাস করে এমন ১২৬টি ব্যারাক, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ছয়টি সরকারি প্রাইমারি স্কুল, শারিতা মিল্লাত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও ভাঙনের মুখে। ভাঙনের কবলে থাকা সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বড়কয়রা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকটি তড়িঘড়ি করে গত বুধবার নিলামে বিক্রি করেছে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ।
কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া মুন্সি বলেন, ভাঙন এলাকার উজানে জিও ব্যাগ ড্রম্পিং করে স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন করে কাওয়াকোলা ইউনিয়নকে বাঁচানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি দাবি জানান তিনি।
এ দিকে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, পাচিল, হাট পাচিল ও সৈয়দপুর গ্রামে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত এক মাসে এ এলাকার প্রায় পৌনে দুইশ বসতভিটা ও ৩০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। গতকাল বিকেলে পাচিল গ্রামের কোবাদ হোসেন মাস্টারের দোতলা ভবনসহ বসতবাড়ি নদীগর্ভে ধসে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, শাহজাদপুর উপজেলায় যমুনার ডানতীর সংরক্ষণে সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। অন্যান্য ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগভর্তি বালির বস্তা ডাম্পিং করা হচ্ছে। তবে যমুনার চরাঞ্চলীয় ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বর্তমানে সামর্থ্য ও পরিকল্পনা নেই বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement