কাশিয়ানীতে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে নিষিদ্ধ জালে মাছ নিধন চলছেই
- চৌধুরী আবু তালেব কাশিয়ানী ( গোপালগঞ্জ)
- ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০৫
‘মাছে ভাতে বাঙালি’ শত বছরের পুরনো এই প্রবাদটি শুধু কথার কথাই নয়, এটা বাঙালির জীবন যাপনের সাথে একাকার হয়ে আছে। প্রতিদিনেই খাবার তালিকায় মাছ না থাকলে যেন আমাদের পেট ভরে খাওয়াই হয় না। সেই মাছের তালিকায় প্রথমেই থাকে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ। বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় আতিথিয়তায় দেশীয় মাছ না থাকলে যেন অতিথির আপ্যায়নে অপূর্ণতা থেকে যায়। কিন্তু বর্তমানে অতিথি আপ্যায়নের সেই প্রথা হারিয়ে যেতে বসেছে। কারণ হারিয়ে যাচ্ছে অর্ধশত দেশীয় প্রজাতির মাছ।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজারে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ এই বর্ষা মৌসুমেও দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। বর্ষার শুরুতে মা-মাছ ডিম ছাড়ার আগেই উপজেলার বিভিন্ন নদী, খাল বিলে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ম্যাজিক জাল, সুতিজাল, ভেসাল ও বেহুন্দী জালে ধরা পরায় দেশীয় মাছ বংশ বিস্তার করতে পারছে না। দ্রুতগতিতে কাশিয়ানী উপজেলায় দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে।
এ উপজেলায় বোয়াল, শোল, গজার, কৈ, শিং, মাগুর, সরপুঁটি, ক্যালকে, টাটকেনি, বাচা, গাইড়ো, বাঁশপাতা, মাগুর, রুই, কাতল, মৃগেল, টেংরা, পুঁটি, রয়না, গুইতে, রিটা, বেলে, পাবদা, কালিবাউস, রঙিন বেতাগা ও মলা ঢেলাসহ প্রায় অর্ধশত প্রকার দেশীয় সুস্বাধু মাছ এখন বিল্ুিপ্তর পথে। এর মধ্যে বাঁশপাতা, সরপুঁটি, বোয়াল, রিটা, পাবদা, রয়না ও আইড় মাছের দেখা পাওয়াই যেন সৌভাগের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, বর্ষায় পানি আসার সাথে সাথেই নিষিদ্ধ জালের অবাধ ব্যবহারে মাছের প্রজনন হতে পারছে না। ওইসব জাল দিয়ে ছোট ছোট ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করে নেয় অসাধু লোকজন। আবার এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি খালগুলো অবৈধভাবে সেচ দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে। শুধু তাই-ই নয়, এক দিকে নিষিদ্ধ জালের অবাধ ব্যবহার, অন্য দিকে কৃষি জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।
দেশীয় মাছ রক্ষা ও অবৈধ্য জাল ব্যবহার বন্ধে ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. রাসেদুজ্জামান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়েনের গ্রাম পুলিশকে (চৌকিদার) একত্র করে সমাবেশের মাধ্যমে অবৈধ জাল বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবৈধ জাল উচ্ছেদ অভিযান চালু রাখায় রাজপাট ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের ছেলে জাল মালিকদের মারধরের স্বীকার হন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার রাজীব রায় এ বছরে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দুই হাজারেরও বেশি ম্যাজিক জাল জব্দ করে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে রাজীব রায় জানান, দেশীয় মাছ রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. রাসেদুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রায়ই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা