১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

করতোয়া নদীতে মাটি খননের মহোৎসব

-

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁহাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে পাঁচটি খনন যন্ত্রের সাহায্যে রাত দিন মাটি খননের কাজ চলছে। এর পর সেই খুঁড়ে তোলা মাটি ডাম্প ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। এতে করে ঝুঁকির মুখে পড়েছে তিনটি উপজেলার আন্তঃসংযোগের সরকারের এলজিইডি বিভাগ কর্তৃক ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর ওপর নির্মিত দু’টি সেতু।
সেতু দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভাঙ্গুড়া থেকে তাড়াশ ও চাটমোহর থেকে তাড়াশ উপজেলার হাজার হাজার মানুষের যোগযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নদীর বুকে যত্রতত্র বড় বড় ডোবার সৃষ্টি হয়েছে। চোখের ওপর নদীটির এমন বেহাল দশা দেখে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় জনমনে ক্ষোভ থাকলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে তারা কিছু বলতে পারছে না।

জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ মৌজায় অবস্থিত বাম তীরে নওগাঁ নূরানী মাদরাসাসহ শতাধিক ব্যবসায়ী পাকা ও আধা-পাকা অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। অপর দিকে ভাঙ্গুড়া উপজেলার করতকান্দি মৌজা থেকে কালিমাতা মন্দিরের নামে ও কিছু ব্যক্তি মালিকানার ১০-১২ জনের একটি সিন্ডিকেট নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি তুলে বিক্রি করছে। এই সিন্ডিকেটের সভাপতি সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম ডাবলু ও সাধারণ সম্পাদক করতকান্দি গ্রামের বিজন দাস লালু। নদী থেকে মাটি কাটার ঠিকাদারি নিয়েছেন স্থানীয় আরেক প্রভাবশালী আব্দুল জব্বার মোল্লা।
নদী দখল প্রসঙ্গে রেজাউল করিম ডাবলু বলেন, আমাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি। এ কারণে মাটি কেটে বিক্রি করছি।

এ প্রসঙ্গে চলনবিল বাঁচাও আন্দোলনের সদস্যসচিব এস এম মিজানুর রহমান জানান, শুধু করতোয়া নদী নয়, চলনবিলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া বড়াল ও গুমানী নদীর মরণদশার বিষয়টিও আমরা প্রশাসনের নজরে এনেছি। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। মানববন্ধন, স্মারকলিপি দিয়েও কিছু হয়নি।
খান মরিচ ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আহসান হাবীবের কাছে নদীর জমির খাজনা নেয়া ও মাটিকাটা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার তেমন কিছু জানা নেই। দেখে ব্যবস্থা নেবো।
তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালেদ হাসান বলেন, নদীর সীমানা নির্ধারণ না থাকায় আমরা তেমন কিছু করতে পারছি না। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীর কাছে ফোনে করতোয়া নদী দখল প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো ব্যবস্থা নিয়েছি। আর করতোয়া নদী দখল বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement