ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেলে জামাই-শ্বশুরের ভাগ্য বদল
- তুহিন আহামেদ আশুলিয়া (ঢাকা)
- ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০৫
শিল্পাঞ্চল খ্যাত আশুলিয়াতে পাওয়া যাচ্ছে ঘানিতে ভাঙানো খাঁটি সরিষার তেল। এর কদরও বাড়ছে দিন দিন। আর এই ঘানিতে ভাঙানো তেলে ভাগ্য বদলিয়েছেন জামাই-শ্বশুর।
শ্বশুর মোস্তফা বেপারী ও মেয়ের জামাই মোহাম্মদ মহসিন ভাগ্য বদলাতে বিগত আট বছর আগে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজারে শুরু করেন ঘানিতে ভাঙানো খাঁটি সরিষার তেলের ব্যবসা। আর শিল্পাঞ্চল আশুলিয়াতে এটিই ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল উৎপাদনের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। খাঁটি সরিষার তেল বিক্রি করে তাদের ভালোই চলছে। তবে সরকারি কিংবা আধা সরকারি কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের সহজ শর্তে ঋণ দান করলে এই ব্যবসা আরো প্রসার ঘটাতে পারবেন বলে দাবি তাদের।
মোস্তফা বেপারী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামের মৃত আইজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে আশুলিয়ার কাঠগড়া সলিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া। মেয়ের জামাই মহসিনও তার সাথেই থাকেন এবং এক সাথে ঘানির তেলের ব্যবসা করছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কাঠের ঘানির সাহায্যে ফোঁটায় ফোঁটায় নিংড়ানো খাঁটি সরিষার তেলের চাহিদা থাকায় এক সময় ঢাকার সাভারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাটবাজারে বিক্রি করা হতো। এই তেল বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন কলু সম্প্রদায়ের মানুষ। সাভার, আশুলিয়া ও মানিকগঞ্জে এই সম্প্রদায়ের মানুষ ঘানি ভাঙানো তেলের ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত এই দৃশ্যটি এখন আর চোখে পড়ে না। এখন যান্ত্রিকচালিত তেল পাওয়া যায় সর্বত্র। তবে ঢাকার কাছে আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজারে ঐতিহ্য ও সনাতন পদ্ধতিতে খাঁটি সরিষার তেল উৎপাদনের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন জামাই-শ্বশুর। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তাদের ঘানিতে ভাঙানো এ খাঁটি সরিষার তেল আশুলিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় খ্যাতি ছড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে কারখানার মালিক মোস্তফা বেপারী নয়া দিগন্তকে জানান, আট বছর আগে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ থেকে কাজের সন্ধানে চলে আসেন আশুলিয়াতে। বাপ-দাদার ঘানির ব্যবসা ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানেন না তিনি। তাই কী করবেন কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষে মেয়ের জামাই মহসিনের সাথে পরামর্শ করে শুরু করেন ঘানি দিয়ে সরিষার তেল ভাঙানো। আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজারে দোকানের নাম দেন মেসার্স মহিমা গরুর ঘানি স্টোর।
তেল কিনতে আসা সফিকুল ইসলাম জানান, তিনি নিয়মিত এখান থেকে সরিষার তেল কিনেন।
মোস্তফা বেপারীর মেয়ের জামাই মহসিন নয়া দিগন্তকে জানান, তাদের এই কারখানায় এখন দুটি গরু রয়েছে। দুটি গরু দিয়েই প্রতি ঘণ্টায় বদল করে ঘানি টানা হয়। প্রতি দিন এক মণের মতো সরিষা ভাঙানো যায় ঘানিতে। এক মণ সরিষা থেকে ১৩-১৪ লিটার তেল বের হয়। আবার খৈলও বের হয় ২৫-২৬ কেজির মতো। কোনো কিছুই ফেলানো লাগে না। ঘানিতে ভাঙানো প্রতি কেজি তেল বিক্রি করেন ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। আর খৈল বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৭০ টাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা