১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনকবলে দেশের বৃহৎ বীজবর্ধন খামার

-

স্থাপনের পূর্ব থেকেই তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের কবলে দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের (বরিশাল ও পটুয়াখালী) বীজ বর্ধন খামার প্রকল্প। বালাম ধানের জন্য বিখ্যাত বরিশালের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরবাঁশবাড়িয়ায় উদ্বোধন করেন এই মেগা প্রকল্প।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বীজবর্ধন খামার স্থাপনে চর-বাঁশবাড়িয়া, চরসাইমুন ও চরবোথামের ১ হাজার ৪৪ দশমিক ৩৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে। সুগন্ধি কালিজিরা আর বাঁশফুল বালাম প্রজাতির ধানবীজসহ স্থানীয় জাতের ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন করে কৃষকের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। ওই খামারকে ঘিরে কৃষক এবং বিএডিসি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু সেই স্বপ্ন চুরমার করে দিচ্ছে রাক্ষুসে তেঁতুলিয়া নদী। খামার প্রকল্পে বীজ উৎপাদনে আসার আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ২৬ একর জমি। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রায় এক’শ ৩০ একর জমি হারিয়ে যায় প্রকল্প এলাকা থেকে।
পর্যায়ক্রমে সেখানে নির্মাণ করা হয় বীজ সংরক্ষণের গুদামঘর এবং প্রকল্পে কর্মরতদের জন্য বহুতল বিশিষ্ট কার্যালয় ভবন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাপনাও রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জমি চাষ করে বীজ উৎপাদন এবং পরিবহনের জন্য শত শত কোটি টাকার বিভিন্ন সামগ্রী কেনা হয়েছে। কিন্তু তেঁতুলিয়ার ভাঙনে সবই বিলীন হয়েছে। ২০১৫ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী বিশ্রামাগারের দ্বিতল ভবনটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে।
তেঁতুলিয়ার অব্যাহত ভাঙনের আড়ালে পরিচালক মিজানুর রহমান ভূমি উন্নয়ন, বালু ভরাট, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী খনন নামক একই কাজ ভিন্ন ভিন্ন নামে দেখিয়ে ৩৪কোটি টাকাসহ নদীতে ব্লক নির্মাণ না করে অর্থ লোপাটের ঘটনায় তার কর্ম স্থগিতাদেশ দেন বিএডিসি চেয়ারম্যান।
স্থানীয় কৃষক মনির হোসেন হাওলাদার জানায়, যেহেতু ভাঙনকবলিত নদীর পাড়ে প্রকল্পটি গড়া হয়েছে, তাই আগে থেকে ভাঙন রোধে ব্লক দ্বারা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলে জমি নদীগর্ভে বিলীন হতো না। পরিকল্পনায় ভুল থাকায় এমনটি হয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে বীজ গুদাম ও অফিস ভবন নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে বীজ বর্ধন খামারের ডিডি শেখ ইকবাল হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে ভাঙন রোধের পরিকল্পনা ভুল ছিল। তার চেয়ে তেঁতুলিয়া নদীর মাঝখানে যে ডুবো চরটি রয়েছে সেটি গভীর করে খনন করলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব। এ ছাড়া ব্লক কিংবা আরসিসি শিটের মাধ্যমে বেড়িবাঁধ তৈরি করা হলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব।’

 


আরো সংবাদ



premium cement