এক টুকরো গোশতের জন্য মুখ লুকিয়ে কান্না
ঈদ হয়নি রাঙ্গাবালীর জেলে পল্লীতে- রফিকুল ইসলাম রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
- ২০ জুন ২০২৪, ০০:১৩
এক মাসের বেশি সময় মাছ ধরা বন্ধ। এখনো পৌঁছায়নি জেলেদের জন্য সরকারি সাহায্যের চাল। এর মধ্যেই এসে হানা দিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, তছনছ করেছে বসতভিটা। তাই সম্পূর্ণ কর্মহীন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বঙ্গোপসাগরে মাছশিকারি জেলেরা। বেকার এসব জেলেদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। এ অবস্থায় এবারের কোরবানির ঈদ যেন জেলে পরিবারের কাছে এসেছে খুশির বদলে দুঃখ নিয়ে।
বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন রাঙ্গাবালীর জেলেরা। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘ এক মাস ধরে মাছ ধরা বন্ধ। এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নিবন্ধিত জেলেদেরকে ৮৬ কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলেও তা এখনো দেয়া হয়নি। নিবন্ধন না থাকায় সরকারি কোনো সহায়তাও পান না উপজেলার কয়েক হাজার জেলে। তাদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। এ অবস্থায় ঈদ হয়নি জেলে পল্লীতে। পকেটে টাকা না থাকায় দৈনন্দিন খরচ নির্বাহ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কর্মহীন জেলেদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হলেও, নিবন্ধন না থাকায় তা থেকেও বঞ্চিত হন অনেক জেলে।
উপকূলের আলমগীর মাঝি জানান, সারা জীবন অন্যের নৌকায় মাছ ধরেছেন। ছেলেরাও ছোটবেলা থেকে জীবিকার অন্বেষণে অন্যের নৌকায় মাছ ধরছে; যা রোজগার হয় সেটাই খরচ হয়ে যায়। অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। বেশি মাছ পড়লে একটু ভালো খাই। কম মাছ পড়লে সমস্যা বেশি হয়। সাগরে অভিযানের কারণে মাছ ধরাই বন্ধ হয়ে গেছে। তার মতো অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে বহু জেলে পরিবার। অনেক জেলে এই কোরবানির ঈদে তার সন্তানদের মুখে এক টুকরো গোশত তুলে দিতে না পেরে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছেন।
বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার কারী জেলে মিলন শিকদার বলেন, সরকার ৬৫ দিনের অবরোধ দিয়েছে আমরা অবরোধ মেনে চলেছি কিন্তু আমাদেরকে সরকারি কোনো সহায়তা দেয়নি। আমরা কী খেয়ে বাঁচব? কোরবানির ঈদ গেল বাবা হয়ে পাঁচ বছরের ছোট মেয়েটার মুখে এক টুকরো গোশত দিতে পারলাম না। এভাবে বেঁচে থেকে কী লাভ! তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকারি সব সহায়তা তো পায় বিত্তবানরা। আমাদের মতো গরিব মানুষ কি আর সরকারের দেয়া সহায়তা পাবো?
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের চাল দেয়ার কারণে জেলেদের চাল আসতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। শিগগিরই প্রথম কিস্তির চাল জেলেদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
ইলিশসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই টানা ৬৫ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তের বঙ্গোপসাগরের সমগ্র এলাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা