অর্থকষ্টে বিনা চিকিৎসায় দুর্বিষহ দিন কাটছে সঙ্গীতশিল্পী খোকনের
- সোহরাব হোসেন সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)
- ২০ জুন ২০২৪, ০০:১২
অর্থকষ্টে বিনা চিকিৎসায় দুর্বিষহ দিন কাটছে সঙ্গীতশিল্পী মনিরুল ইসলাম খোকনের (৬০)। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের খান বানিয়ারা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে ও দুই ছেলে সন্তানের জনক। স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। খোকনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার ঝর্ণা স্বামীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গতকাল বুধবার খোকনের সাথে কথা বলে ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাল্যকাল থেকেই সঙ্গীতে পদার্পণ মনিরুল ইসলাম খোকনের। তিনি সঙ্গীতের ওপর ঢাকায় বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে সহস্রাধিক গানের গীতিকার এবং নিজের লেখা গানে সুর করেছেন ১২০টিতে। ১৯৭৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়ার পর অনেক টাকা ব্যয়ে সুস্থ হন তিনি। এর পর থেকে গানের শিক্ষকতা করে চালাতেন সংসার। মাঝে মধ্যে বেতার ও টিভিতে ডাক পড়লে গান রেকর্ডে পেতেন সম্মানী।
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপর বেশ কিছু গান বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার হলে জনপ্রিয়তা পান খোকন। এ ছাড়া তার লেখা অনেক গান গেয়েছেন দেশের স্বনামধন্য সঙ্গীত শিল্পী কনকচাঁপা, শাকিলা জাফর, এমএ হামিদসহ অনেকেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তার নিজের লেখা গানে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন নিজেই। সঙ্গীতে অবদানের জন্য পেয়েছেন একাধিক পুরস্কারও। ২০১৯ সালে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। যার জন্য কোনো অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের সুযোগ পান না তিনি। জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে পান সামান্য ভাতা। এরপর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে গান রেকর্ডের জন্য আর ডাকা হয় না তাকে। নেই কোনো আয়ের উৎস। উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকেও বাদ পড়লে অর্থ সঙ্কটে পড়েন তিনি।
২০২২ সাল পর্যন্ত সঙ্গীত সাধনা চালিয়ে যাওয়া অসুস্থ মনিরুল ইসলাম খোকনের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার হার্টের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পেসমেকার স্থাপন করা জরুরি। এতে খরচ হবে ১০ লাখ টাকা। তার পক্ষে এ ব্যয় মেটানো সম্ভব না হওয়ায় তার পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দিন কাটছে গুণীশিল্পী খোকনের।
এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কয়েক দিনের মধ্যে তাকে কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এ ছাড়া অসহায় ও দুস্থ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুদানের জন্য তার একটা আবেদন ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা