পোরশায় মাটি খুঁড়লেই মিলছে প্রত্নতাত্ত্বি¡ক সম্পদ
- এম এইচ রইচ পোরশা (নওগাঁ)
- ১৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫
নওগাঁর পোরশায় মাটি খুঁড়লেই মিলছে প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। আর এসব প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ মূল্যবান হওয়ায় প্রায় এক যুগেরও অধিক সময় ধরে এলাকার লোকজন মাটি খুঁড়ে এসব প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জানাজানি হলেও এগুলো রক্ষায় এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুনাথপুর গ্রামে প্রত্নতাত্ত্বিক ওই সম্পদগুলো উদ্ধারের জন্য প্রতিনিয়ত খোঁড়াখুঁড়ি করছে লোকজন। টেকঠা নামক এক মাঠে প্রায় ১৪ বছর আগে মাটি খনন করার সময় গর্ত থেকে কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র পায় স্থানীয়রা। এ জিনিসগুলো ছিল পাথর, মার্বেল ও তসবি-জাতীয়। জিনিসগুলো দেখতে সুন্দর এবং মূল্যবান ছিল। এরপর থেকে ওসব মূল্যবান জিনিসপত্র পাওয়ার আশায় মাটি খনন করতে শুরু করে স্থানীয় লোকজন। এতে যেখানেই মাটি খনন করা হয়, সেখানেই বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র পায় তারা। এক সময় এসব জিনিসপত্র পাওয়ার আশায় মাটি খেঁাঁড়ার ব্যাপারে যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে পুনর্ভবা নদীর পূর্বপাড়ের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাটি খননের প্রতিযোগিতা।
পশ্চিম রঘুনাথপুর জেলেপাড়ার বৃদ্ধ আব্দুল কাদের জানান, সর্বপ্রথম তিনিই ওই স্থানে অনেকগুলো ছোট-ছোট পাথর পেয়েছিলেন। পাথরগুলো দিয়ে তিনি তসবি তৈরি করে ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে অন্যজনের কাছে পাঁচশ টাকায় তসবিটি বিক্রি করে দেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে লোকজন শুরু করে মাটি খননের কাজ।
আব্দুল কাদের আরো জানান, এখন প্রতিদিনই স্থানীয়রা মাটি খনন করছে এবং মাটির ৪-৫ ফুট নিচেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রংয়ের তামার পয়সা, তাবিজ, তসবির পাথর, মার্বেল ও বিভিন্ন রংয়ের বোতাম। কোনো কোনো পাথরের জিনিসপত্র ১০-১২ হাজার টাকায় এবং কোনো কোনোটি দুই লাখ টাকাও বিক্রি হয়েছে।
টেকঠা গ্রামের রবিউল জানান, পাশের পোরশা গ্রামের মৃত ওহাব শাহ্ চৌধুরীর তিন বিঘা জমি রয়েছে। তিনি ওই জমি দুই লাখ টাকা দিয়ে লিজ নিয়েছিলেন। মাটি খোঁড়ে যেসব জিনিসপত্র পেয়েছিলেন তাতে তার লাভ হয়েছিল।
টেকঠার ফইমুদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, তার বাড়ির পাশে নিজের ৮ শতাংশ জমি খনন করে তিনি একটি চাকতি পেয়ে ৫ হাজার টাকায়, দুইটি ঢোল ৫০ হাজার টাকায়, দু’টি জালি পোটল এক লাখ টাকায় এবং কয়েকটি মার্বেল ও বোতাম ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, এসব জিনিষপত্র নওগাঁ, বগুড়া, নাটোর ও পাবনা অঞ্চলের কিছু ব্যবসায়ী ক্রয় করে নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, টেকঠা নামক ওই স্থানটির কোনো প্রতœতাত্তিক মূল্য আছে কিনা সেটি নির্ণয়ের জন্য ২০২২ সালের শেষের দিকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ব অধিদফতর রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক বরাবর একটি পত্র দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পত্রের আলোকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে নওগাঁর পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টডিয়ান ফজলুল করিম জানান, ইতোমধ্যে তিনি অধিদফতর থেকে চিঠি পেয়েছেন। চিঠির আলোকে তিনি স্থানটি পরিদর্শনও করেছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আবার তারা স্থানটি পরিদর্শন করে তথ্যসংগ্রহ করবেন এবং স্থানটি সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব দিবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা