১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ট্রেন চলাচলে বিলম্ব, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ তারাকান্দি জামালপুর চট্টগ্রাম রেলরুট
-

ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা-তারাকান্দি-জামালপুর-চট্টগ্রাম রেলরুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর এক্সেপ্রেসগুলো প্রতিদিনই বিলম্বে আসা-যাওয়া করায় যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ রুটে মোট পাঁচটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের মধ্যে ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলরুটে আন্তঃনগর তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, ঢাকা-তারকান্দী রেলরুটে আন্তঃনগর যমুনা ও অগ্নিবীণা এবং চট্টগ্রাম-জামালপুর রেলরুটে আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে। এ ট্রেনগুলো প্রায় প্রতিদিনই সাড়ে তিন ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা বিলম্বে যাতায়াত করছে। এতে করে যাত্রী দুর্ভোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি লাখ লাখ কর্মঘণ্টাও নষ্ট হচ্ছে।
জানা যায়, জামালপুর-চট্টগ্রাম রেলরুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি গত এক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। এ বিলম্বের কারণে যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন।
গত সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে জামালপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ট্রেনটির জামালপুর স্টেশনে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সেটি পৌঁছায় রাত ১০টায়।
শফিকুল নামের এক যাত্রী বসে আছেন ওভারপাস সেতুর সিঁড়িতে। তিনি বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রাম যাবেন। দুই ঘণ্টা আগে তিনি স্টেশনে এলেও ট্রেন না আসায় ক্লান্ত হয়ে বসে আছেন তিনি।
ঢাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র ট্রেনে আগত যাত্রী মাহমুদুল ইসলাম বলেন, যে ট্রেন চার ঘণ্টায় জামালপুর পৌঁছার কথা, সেই ট্রেন সাত ঘণ্টায় এসে পৌঁছল। ট্রেনের শত শত যাত্রীর হাজার হাজার কর্মঘণ্টা এভাবেই নষ্ট হয়ে গেল।
গতকাল মঙ্গলবার জামালপুর স্টেশনে দেখা হয় আন্তঃনগর যমুনা ট্রেনের যাত্রী শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, কর্মঘণ্টা নষ্ট না হওয়ার জন্য সারা বিশ্বের মানুষ আরো দ্রুতগামী হচ্ছে। আর আমরা দিন দিন ধীর গতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নষ্ট করছি আমাদের মূল্যবান কর্মঘণ্টা। তিনি আরো বলেন, যেকোনো স্থানে যখন তখন একটি লোকাল ট্রেন অথবা একটি আন্তঃনগর ট্রেন ক্রস করার জন্য অন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এভাবে সময় নষ্ট করার কী অজুহাত থাকতে পারে?
ইসলামপুরের রেলযাত্রী শফিক সেলিম বলেন, ৫০-৫৫ বছর ধরে দেখছি এই লাইনের ট্রেনের দুরবস্থা। দীর্ঘ ৫৫ বছরেও ট্রেনগুলোর উন্নয়ন হলো না। ট্রেনের বগি, ইঞ্জিন এবং লাইনের উন্নয়ন না করে স্টেশনের দেওয়াল ও গ্রিলের উন্নয়ন করলে তো আর ট্রেনের উন্নয়ন হয় না। দুষ্কৃতকারীরা আবার ওই সব গ্রিল এখন খুলে খুলে নিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম (পূর্ব) রেলওয়ে অঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস মোবাইলফোনে বলেন, আমাদের ইঞ্জিনগুলো ৫০-৬০ বছরের পুরনো। এগুলো কোনোরকমে চালানো হচ্ছে। কনডেম করে দিলে যতটুকু চালাচ্ছি তাও আর চালানো সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন, সিগন্যালের কারণেও ট্রেন লেট হতে পারে।
ঢাকা-তারাকান্দি-ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলরুটের উন্নয়নে তাদের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে অঞ্চল চট্টগ্রাম (পূর্ব) রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়ার অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।


আরো সংবাদ



premium cement