মাসিক সভা বর্জন ১২ ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিত দুই ভাইস-চেয়ারম্যান

সমন্বয়হীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন ১২ জন ইউপি চেয়ারম্যান। এদিন তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মল্লিক ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাহানারা বেগমও বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।
ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মদ তালুকদার তাদের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা ও সমন্বয় না করেই গত রোববার এককভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। এ কারণেই মাসিক সভাসহ উপজেলা প্রশাসনের সব কাজ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।
গত সোমবার সকালে সরেজমিনে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০টায় পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোরাম সঙ্কটে সভা হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সঞ্চালনায় বেলা ১২টায় চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মদ তালুকদারের সাথে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র লোকমান ডাকুয়া, গারুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম কাইয়ুম খান, কলসকাঠী ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল ওয়াহিদ তালুকদার মুন্না, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুনিতি কুমার সাহা প্রমুখ।
দাঁড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা ও সমন্বয় না করেই দায়িত্বভার গ্রহণ করায় তিনিসহ ১৪টি ইউনিয়নের ১২ জন চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেন। বর্জনকারী চেয়ারম্যানরা হলেন- রঙ্গশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান বসির উদ্দিন সিকদার, ভরপাশার চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান খান খোকন, পাদ্রীশিবপুরের জাহিদুল হাসান বাবু, চরামদ্দির শাহাবুদ্দিন খোকন, দুধলের গোলাম মোর্শেদ উজ্জল, দুর্গাপাশার হানিফ তালুকদার, ফরিদপুরের এস এম শফিকুর রহমান, কবাইয়ের জহিরুল হক বাদল তালুকদার, নলুয়ার ফিরোজ আলম খান, চরাদির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ও নিয়ামতি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সাথে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের পরিচিতি সভায় ১৮ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র চারজন উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। কোরাম সঙ্কটে মাসিক সভা না হওয়ায় উপজেলা পরিষদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান রাজিব আহম্মদ তালুকদার বলেন, জনপ্রতিনিধিদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। মাসিক সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি অনভিপ্রেত। কোনো ভুল বোঝাবুঝি হলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। তাই দায়িত্বশীল হয়ে আগামী মাসিক সভায় তারা উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।