লৌহজংয়ে পদ্মার রুদ্রমূর্তি ৩ দিনে বিলীন ৭০ বসতঘর
- আব্দুস সালাম মুন্সীগঞ্জ
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
মুন্সীগঞ্জে রেমালের প্রভাবে পদ্মায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে তিন দিনে লৌহজংয়ের পাঁচটি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ৭০টি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা জানিয়েছেন, বর্ষার শুরুতেই পদ্মায় কমবেশি ভাঙন দেখা দিলেও গত তিন দিন ধরে পদ্মা যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। বর্তমানে ভাঙনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়ন, বেজগাঁও ইউনিয়ন, লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন ও কনকসার ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা।
গাঁওদিয়া ইউনিয়নের মেম্বার রশিদ শিকদার জানান, রেমালের প্রভাবে পদ্মা হঠাৎ ফুঁসে উঠেছে। গত সোমবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিনে পদ্মার ভাঙনে শুধু গাঁওদিয়া ইউনিয়নের হারিদিয়া গ্রামে অর্ধশতাধিক বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অসময়ে পদ্মার হঠাৎ ভাঙনের কবলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পদ্মার তীরবর্তী বাসিন্দারা। বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় অর্ধশতাধিক পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
সরেজমিনে গতকাল রোববার দেখা গেছে, ভাঙনকবলিত এলাকায় তিন দিন ধরেই স্থানীয় মেম্বার ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্তদের দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে লৌহজং-তেউটিয়া, বেজগাঁও ও কনকসার ইউনিয়নের আরো ২০টি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মার প্রবল স্রোত আর উত্তাল ঢেউয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
লৌহজং-তেউটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, বছরজুড়ে পদ্মার ভাঙন কমবেশি চলে। তবে স্থানীয় এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি চার শ ৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ আনেন মন্ত্রণালয় থেকে। কিন্তু কাজের ধীরগতি, অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার কারণে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আসাদ্দুজামান, মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম, লৌহজং উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএম শোয়েব, উপজেলা চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন পদ্মার ভাঙন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
উপস্থিত এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, চলমান কাজের ৪৭ শতাংশ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। তবে আপৎকালীন সময়ের জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদ্মায় ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার জন্য ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে পদ্মার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।