১৩ পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ভাঙন
বরগুনার ৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত- গোলাম কিবরিয়া বরগুনা
- ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০
ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডবে রেখে গেছে ক্ষতের দাগ। টানা দুই রাত একদিন তীব্র ঝড়ের সাথে ভারী বর্ষণে নিঃস্ব হয়েছে বরগুনার পাঁচ লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি ও সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশেহারা এ উপকূলের মানুষ। বরগুনা সদর উপজেলাসহ মোট ৫টি উপজেলায় ১৩টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। এতে প্লাবিত হয়েছে ৩ শতাধিক গ্রাম। ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৪ হাজার ১৫৭ হেক্টর জলাশয়ের মাছ ও চিংড়ির ঘের। কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ খালি গায়ে রঙ দিয়ে বুকের উপর লিখে ‘ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টার চাই’ এই দাবিতে ইতোমধ্যে মানববন্ধন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী বলেন, পরিকল্পিত আর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছরই ক্ষতির মুখে পড়ছে তারা।
বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। তাদের মধ্যে ৩৭ জন আহত হন। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের পরে ঘরের ওপর পড়া গাছ সরাতে গিয়ে একজন নিহত হন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলায় ৩ হাজার ৩৭৪টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ১৩ হাজার ৩৪টি ঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বরগুনা সদর উপজেলাসহ মোট ৫টি উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নের ১৩টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক গ্রাম। ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৪ হাজার ১৫৭ হেক্টর জলাশয়ের মাছ ও চিংড়ির ঘের।
কবিরাজ পাড়ার কৃষক কালাম বলেন, নিম্নচাপ, ঝড় এলে আগে আমাদের উপকূলবাসীর বলী হতে হয়। যার কারণে আমাদের এই লড়াইটা অভ্যেস হয়ে গেছে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সুনামির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকাটা আমাদের জীবন। এক এক সময় এক এক আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের না রয়েছে ভালো বেড়িবাঁধ না রয়েছে ভালো জীবনযাপন।
নিশান বাড়িয়ার জালাল জিহাদি জানান, আমার চোখের সামনে মসজিদের সব টিন উড়িয়ে নিয়েছে গাছপালা পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ৮০ বছর বয়সে ৪৮-৫৫ ঘণ্টা এ রকম বন্যা আমার জীবনে দেখিনি। মুসল্লিরা এখন খোলা আকাশের নিচে নামাজ পড়ছেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা: রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে বরগুনার ৪২টি ইউনিয়নের মানুষেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সঠিক সময়ে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারায় ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে নিহতের ঘটনা ঘটেনি। সরকারিভাবে যে ত্রাণ ও সহযোগিতা পাচ্ছি তা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা