৯০ বছর বয়সেও চশমা ছাড়া পত্রিকা পড়েন করম আলী
- শওকত আলী রতন দোহার (ঢাকা)
- ৩০ মে ২০২৪, ০০:০৫
করম আলীর বয়স ৯০ বছর। বয়সের কারণেই শারীরিকভাবে যতটা দুর্বল থাকার কথা, ততটা দুর্বল নন তিনি। এই বয়সেও তিনি কাজেকর্মে স্বাভাবিক। এমনকি চশমা ছাড়াই পত্রিকা পড়তে পারেন। চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে বসে তিনি যখন খালি চোখে দৈনিক পত্রিকা পড়েন, তখন অনেকেই আশ্চর্য হন।
করম আলীর বাড়ি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার রাইপাড়া ইউনিয়নের আকন্দপাড়া এলাকায়। তার বাবা মৃত রহম আলী আকন্দ। করম আলী উপজেলার পালামগঞ্জ বাজারে গোখাদ্য বিক্রি করেন। বেচাবিক্রির ফাঁকে সময় পেলে পাশের দোকানে বসে চা খান, পত্রিকা পড়েন। চশমা ব্যবহার করেন না। তার কোনো অসুবিধা হয় না।
পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা করম আলী জানান, আমাদের সময় এখনকার মতো প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। রাইপাড়া মাহেন্দ্র সাহার বাড়িতে লেখাপড়া করেছি। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানিয়ে কলাপাতায় লিখেছি। কখনো কখনো নটাঘাস দিয়ে কলম বানিয়েছি।
ওই সময়ে কৃষিক্ষেতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হতো না। করম আলী ছোট বেলা থেকেই বাবার সাথে কৃষি কাজ করতেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাড়ভাঙা খাটাখাটুনি করতেন তিনি। পরে সৌদি আরবে চলে যান এবং সেখানে দীর্ঘদিন কাটিয়ে দেশে ফিরেন। পালামগঞ্জে তার একটি গো-খাদ্যের দোকান আছে। ব্যবসার হিসাব-নিকাশ নিজেই রাখেন। এলাকায় তার সমবয়সী কেউ আর বেঁচে নেই। স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সংসার।
করম আলী বলেন, ১২ বছর বয়সে মাকে হারিয়েছি। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সেই মায়ের সংসারেই বড় হয়েছি, বিয়ে সাদি করেছি। এ নিয়ে কখনো ঝগড়া বিবাদ হয়নি। জীবনে তেমন কিছু চাওয়ার ছিল না। যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে ঝগড়াঝাটি হয় না। এই শেষ বয়সে এসেও তেমন কিছু চাওয়ার নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সময়ে মানুষের মধ্যে আদব কায়দা ছিল। এখনকার মানুষের আদব জ্ঞান নেই। বাকি সময়টা সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে চান তিনি। এটাই তার শেষ ইচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা