১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাজবাড়ীতে লিচুর বাম্পার ফলন

আলাউদ্দিন শেখের বাগানের কদমী জাতের লিচু : নয়া দিগন্ত -

রাজবাড়ীর গাছে গাছে ঝুলছে রসালো পাকা লিচু। এ জেলাতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের চেয়েও সুস্বাদু লাল টসটসে লিচু। জেলার শতাধিক চাষি সবজি ক্ষেতের মধ্যে শত শত লিচু গাছ রোপণ করে উন্নত জাতের লিচু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। অতিরিক্ত খরার কারণে আগেই পেকে গেছে এবারের লিচু। বাগানে বাগানে ঝুলছে এখন কাঁচাপাকা লিচু।
এ বছর কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, বোম্বাই এলাচি ও পাতি এই পাঁচ জাতের লিচুর চাষ হয়েছে রাজবাড়ীতে। জেলার চাষিরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে লিচু চাষেই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। স্থানীয় এক লিচু ব্যবসায়ী জানান, এক একটি বাগান চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তাই চাষিরা কোথাও একটু খালি জায়গা পেলেই সেখানে কদমী লিচুর বাগান তৈরি করেন।
খরার কারণে গাছের মুকুল কিছুটা নষ্ট হওয়ার পরও এ বছর লিচুর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। লিচু ক্ষণকালীন ফল। তবে আগাম উৎপাদন ও অধিক দামের কারণে লিচু চাষে লাভ দেখছেন চাষিরা। এ জেলায় উৎপাদিত লিচুর রঙ বেশ লাল এবং ভেতরটা রসালো ও মাংসল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে এ জেলার লিচু।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর এ জেলায় বিভিন্ন জাতের ৮০টি লিচুর বাগানে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এসব বাগান থেকে এবার ৩৬০ টন লিচুর উৎপাদন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা। কোনো ধরনের রাসায়নিক বিষমুক্ত রাজবাড়ীর লিচু আকারে বড় ও রসালো। ভৌগোলিক কারণে রাজবাড়ীর লিচু মৌসুমের আগেভাগেই বাজারজাত করা যায়। এ জেলায় উৎপাদিত লিচুর মধ্যে কদমী ও বোম্বাই সর্বশ্রেষ্ঠ।
জেলা সদরের চন্দনী ইউনিয়নের আদর্শ কৃষক জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আলাউদ্দিন শেখ চলতি মৌসুমে এক একর জমিতে লিচুর বাগান করেছেন। তার বাগানে সরেজমিন দেখা যায়, সব গাছেই থোকায় থোকায় লিচু ধরে আছে। আলাউদ্দিন শেখ জানান, এ এলাকার মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অনেকেই তার বাগানে এসে লিচুর কলম (চারা) কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তার দেয়া কলমে প্রথম বছর থেকেই লিচু পাওয়া যায়। তিনি জানান, এ বছর বৃষ্টি বাদল কম হওয়ায় লিচুতে পোকা ধরেনি। কোনো ধরনের রাসায়নিক কীটনাশকও দিতে হয়নি।
জেলা সদরের চন্দনী গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, তিনি তিন বছর আগে থেকে তার দুই একর জমিতে সাড়ে ৩০০ গাছ রোপণ করে বড় একটি লিচু বাগান করেছেন। এই বাগানটি এবারের জন্য তিনি বেপারীদের কাছে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ও সদর উপজেলা কৃষি অফিসার জনি খান জানান, রাজবাড়ীর মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য উপযোগী। তাই চাষিরা লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এবার লিচুর ভালো দাম পেয়ে তারা বেশ খুশি। আশা করছি, আগামীতে এই অঞ্চলে লিচুর চাষ আরো বেড়ে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement