১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অতিদরিদ্রদের তালিকায় ইউপি সদস্যদের সন্তান ও স্বজনরা

কর্মসূচিতে তারা অংশ নেন না
-

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৬ নং নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদে এই ‘অতিদরিদ্রদের’ তালিকায় জায়গা পেয়েছে ইউপি সদস্যদের ছেলে, ভাইয়ের বউ ও ভগ্নিপতিরা। এই অতিদরিদ্ররা কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় বছরে দুই দফায় কাজের সুযোগ পান। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে সড়কের ক্ষুদ্র সংস্কার, মাটি কাটা, রাস্তার ঘাস পরিষ্কার করার মতো কাজ। কিন্তু ইউপি সদস্যদের সন্তান কিংবা আত্মীয়স্বজনরা মাটি কাটা, সড়ক সংস্কারের মতো কঠিন কাজে অংশ নেন না। অথচ তারা এসব কাজের সুবিধা ঠিকই ভোগ করে থাকেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, নাউতারা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের আনোয়ারের বাড়ী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত চলছে অতিদরিদ্রদের ৩৩ দিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি। এই কর্মসূচির ১৯১ নং জবকার্ডের সুবিধাভোগী ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফর উদ্দিনের (কাচুয়া) ছেলে শামীম ইসলাম রয়েছেন। ১৩২ নং জবকার্ডের সুবিধাভোগী মোছা: নার্গিস বেগম ওই ইউপি সদস্যের ভাইয়ের বউ। অন্য দিকে ১৫৪ নং জবকার্ডের সুবিধাভোগী আব্দুল খবির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মোছা: লাকী বেগমের ননদের স্বামী। ওই কর্মসূচির সদস্যরা জানান, তারা ইউপি সদস্যের ছেলে, আত্মীয়স্বজন হওয়ায় মাটি কাটেন না। এ কাজ করতে তাদের আত্মসম্মানে বাধে। অথচ অতিদরিদ্রদের এই কর্মসূচিতে নিজেদের নাম লিখিয়ে তারা টাকা খাচ্ছেন। তাদের কাজগুলো অন্যদেরকে করে দিতে হয়। এতে কষ্ট হলেও অনেকটা নিরুপায় হয়েই মেনে নিতে হচ্ছে তাদের। কর্মসূচির এক সুবিধাভোগী জানান, এসব চলমান কর্মসূচিতে মাটি কাটা তো দূরের কথা, কোনো কাজেই তাদের ছায়াটাও দেখিনি। অথচ সুবিধাভোগের অংশটুকু তারা ঠিকই নিয়ে নেন।
ইউপি সদস্য জাফর উদ্দিনের ছেলে শামীম ইসলাম বলেন, আমি কোনো দিন মাটি কাটিনি। কিন্তু মাঝেমধ্যে গিয়ে খাতাপত্র লেখালেখি করে দিই। অন্য দিকে ১৩২ নং জবকার্ডের সুবিধাভোগী মোছা: নার্গিস বেগমকে মোবাইলে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নাউতারা ইউপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মোছা: লাকী আক্তারের স্বামী জিয়াউর রহমান বলেন, আব্দুল খবির আমার ভগ্নিপতি। তিনি মাটি কাটেন না, কিন্তু সুবিধা ভোগ করছেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জাফর উদ্দিন বলেন, অতিদরিদ্র হওয়ায় আমার ছেলে এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী। আমার ছেলে খাতাপত্র দেখে। আমি অতিদরিদ্র কিন্তু ইউপি সদস্য। আর ইউপি সদস্যের ছেলে মাটি কাটবে কেন?
এ প্রসঙ্গে নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মনি বলেন, ইউপি সদস্যদের সন্তান বা আত্মীয়স্বজন অতিদরিদ্র হলে তারা এই কর্মসূচির সুবিধাভোগ করতেই পারেন। তবে প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা যেই হোন না কেন কর্মসূচিতে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ করতে হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেজবাহুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে দেখি। যদি এমন ঘটনা হয়, তাহলে নাম পরিবর্তন করে দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement