আলাই নদীর ভাঙনে আতঙ্কিত দুই উপজেলার মানুষ
- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ১২ মে ২০২৪, ০০:০৫
আলাই নদীর ভাঙনে আতঙ্কিত জামালপুরের দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। প্রতি বছর বন্যা মৌসুমে আলাই নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি ও ফসিল জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয় মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের শত শত পরিবার।
ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের শিঙ্গা এলাকায় যমুনা নদী থেকে উৎপত্তি হয়েছে আলাই নামে এই ছোট্ট নদীর। শুষ্ক মৌসুম মোহনা শুকিয়ে পানিশূন্য হয়ে পড়ে নদীটি। আর বর্ষা মৌসুমে যমুনার পানি প্রবেশ করে ভাঙনের তাণ্ডব চালায় এক সময়ের শান্ত আলাই বিল। কালের বিবর্তনে যমুনা নদীর সাথে সংযোগ হয়ে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই বসতবাড়ি, ফসিল জমি ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার উপর তাণ্ডব চালায় বিল থেকে সৃষ্ট আলাই নদী।
জামালপুরের মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বুক চিড়ে প্রবাহিত হচ্ছে ছোট্ট নদী আলাই। গত কয়েক বছর ধরে আলাইয়ের ভাঙনে বিলীন হয়েছে শত শত বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। এলাবাসী জানান, ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ডাম্পিং, বাঁশ পাইলিং, পেলাসাইডিং এবং আরসিসি গাইড ওয়ালসহ নানা অজুহাতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধ হয়নি এখনো।
মেলান্দহ উপজেলা কুলিয়া ইউনিয়নে জাফর শাহী পচাবহলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙনে এই এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়। আর ভাঙন ঠেকানোর নামে কিছু মানুষের পকেট ভর্তি হয়।
ইসলামপুরের চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, আমার ইউনিয়নের শিংভাঙা এলাকায় যমুনা নদী থেকে আলাই নদীর সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম এলেই ছোট্ট এ নদীটির তীব্র স্রোতে কয়েক বছর ধরে মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলার ১৫-২০টি গ্রামে ভয়াবহ ভাঙনের তাণ্ডব চালায়। তিনি বলেন, নদীর মোহনায় প্রটেকশন না দেয়া হলে ভাঙন রোধ করা কঠিন হবে। কারণ যমুনায় পানি বাড়লেই সে পানি সরাসরি আলাই নদীতে প্রবেশ করে খরস্রোতা নদীর রূপ ধারণ করে। ফলে তীব্র স্রোতে শুরু হয় ভয়াবহ ভাঙন।
ইসলামপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বর্ষা মৌসুমে বিকট আকার ধারণ করতে পারে। এতে হাটবাজার, রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, বসতবাড়ি ও ফসলি জমি আলাই নদীতে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের মানুষ ও অসংখ্য পরিবার।
জামালপুর উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, আলাই নদীর ভাঙন রোধে ইসলামপুর উপজেলার ইসলামপুর সদর ইউনিয়নে পচাবহলা অংশে পচাবহলা জয়তুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয় এবং পচাবহলা বাজার রক্ষায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। মেলান্দহের কুলিয়া ইউনিয়নে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সময় মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জামালপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ধর্মমন্ত্রী মোহাম্মদ ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, ইতোমধ্যে আলাই নদীর মোহনা শিংভাঙা-দেওয়াপাড়া এলাকায় প্রটেকশন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন (ডিওলেটার) দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দটি পাওয়া যাবে। বরাদ্দটি পেলে দুই উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ভাঙন দুটোই রোধ করা সম্ভব হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা