বৃষ্টিতে কৃষকের মুখে স্বস্তির হাসি
- উত্তম গোলদার মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)
- ১২ মে ২০২৪, ০০:০৫
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রবি মৌসুমের ফসলের জন্য আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে। বৃষ্টির কারণে মুগ ডাল, মরিচ ও বোরো ফসলের সজীবতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ফসল যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে নতুন করে অঙ্কুর দিতে শুরু করেছে। এতে স্বস্তি দেখা গেছে স্থানীয় কৃষকের মুখেও।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। চলছে ডাল, মরিচ ও আউশের মৌসুম। উৎপাদনের দিক দিয়ে এখানকার কৃষক স্থানীয় আউশের উপর বেশি নির্ভরশীল। এখন কৃষকরা আউশের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত, যা বৃষ্টির ফলে পাওয়া গেছে। এতে কৃষক অনেক উচ্ছ্বসিত। বোরো ধানের চিটা হওয়া প্রতিরোধে বৃষ্টি কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
চলতি রবি মৌসুমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলায় বোরো ধান চাষ হয়েছে ৩২০ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে উফশী বোরো ধান চাষ হয়েছে ২৮০ হেক্টর জমিতে ও হাইব্রিড বোরো ধান চাষ হয়েছে ৪০ হেক্টর জমিতে। চলমান তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে বোরো ধানের ক্ষতির পরিমাণ ১.৬০ হেক্টর। এছাড়া এ বছর উপজেলায় মুগ ডাল চাষ হয়েছে ৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে, মরিচ চাষ হয়েছে ৩৮০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলায় রবি মৌসুমে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি মৌসুমি পতিত থাকে। এসব মৌসুমি পতিত জমিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের রবি মৌসুমে ৩৫ হেক্টর জমিতে হাইসান ৩৩, হাইসান ৩৬, বারি সূর্যমুখী ২, বারি সূর্যমুখী ৩ ও ইউনিসান জাতের সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। তীব্র তাপদাহ শেষে মুষলধারে হওয়া বৃষ্টিপাতে মির্জাগঞ্জের কৃষকদের পাশাপাশি জনমনে স্বস্তি নিয়ে এসেছে। এর ফলে ৩৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হওয়া মরিচে পাতা কুঁকড়ে যাওয়ার সমস্যার সমাধান দেরিতে হলেও আশার আলো দেখছেন কৃষি বিভাগ। মুগের যেসব মাঠ পানির অভাবে বিবর্ণ হয়ে গেছে, সেসব মাঠে নতুন করে কিছু বাড়তি ফলন হবে।
উপজেলার সোনাপুরা গ্রামের মুগ ডাল চাষি রবিন মিস্ত্রি বলেন, গত এক মাস খড়ার পরে, বৃষ্টি কৃষকদের কাছে অনেক আনন্দের মতো। এতে মুখ ডালের গাছ তাড়াতাড়ি বড় হবে এবং ফলন বাড়বে। ছৈলাবুনিয়া গ্রামের আদর্শ মরিচ চাষি সমির অধিকারী ও মজিবর রহমান বলেন, এ বছর রবি মৌসুমের শুরু থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলি জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়ে। গাছ বৃদ্ধি কম হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় গাছ ও ফসলের জন্য ভালো হয়েছে। ছৈলাবুনিয়া গ্রামের আরেক বোরো চাষি আবদুর রহমান বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের পোকা মাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের বিভিন্ন রকম ক্ষতিকর পোকা মারা যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাহিদ হাসান জানান, এ বছর ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আউশধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষক ইতোমধ্যে আউশের বীজতলা তৈরি করা শুরু করেছে, যার জন্য বৃষ্টি খুবই প্রত্যাশিত ছিল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, হঠাৎ এ বৃষ্টি ফসলের জন্য আশীর্বাদ। আউশ ধানের আগাম বীজতলা তৈরির জন্য এ বৃষ্টিপাত কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা