১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শোভা ছড়ানো সোনালু গাছ বিলুপ্তির পথে

মুলাদীতে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে সোনালু ফুল : নয়া দিগন্ত -

বরিশালের মুলাদী উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে সোনাইল বা সোনালু গাছ নামে বেশি পরিচিত গাছটি। এক সময় বাংলার প্রতিটি গ্রামে বাড়িতে অথবা পথে ঘাটে দেখা যেত এই সোনালু গাছ। এমন কি গেরস্তবাড়ির ঘরের কোনো অথবা আঙ্গিনায়ও অযতেœ অবহেলায় বেড়ে ওঠত গাছটি। মুলাদী উপজেলায় এখন খুঁজলে হাতেগোনা কয়েকটি সোনাইল গাছ পাওয়া যাবে। বিলুপ্তির পথে হলেও গাছটি আজও শোভা ছড়িয়ে যাচ্ছে।
অনেকে হোনাইল নামেও ডাকে এই গাছটিকে। গ্রীষ্মের দুপুরে প্রচণ্ড রোদে সোনালু গাছের ফুলে চোখে এক ধরনের নেশা এনে দেয়। দেখলে পরাণ জুড়িয়ে যায় পথিকের। গাছের কচি ডালে লম্বা ডাটায় থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সোনালু ফুলের বাহার সবার মন ভুলিয়ে দেয়। গ্রীষ্মের তপ্ত বাতাসে সোনালু ফুলের দোল দেখে মনে হয় এ যেন প্রকৃতির এ উষ্ণ অভ্যর্থনা।
ইংরেজিতে সোনালুকে বলা হয় ‘গোল্ডেন শাওয়ার ট্রি’। বৈজ্ঞানিক নাম কেসিয়া ফাসটুলা। এর ফলগুলো হয় লম্বা লাঠির মতো এবং নলাকার। ফলের ভিতরের আঁঠালো কালো শাঁস বানরের খাবার বিশেষ। তাই অনেকে এই ফলটিকে বাঁদর লাঠি বলে থাকে। স্থানীয়ভাবে অনেকে পুরো গাছটিকেই বলে বান্দর লাঠি গাছ। গাছটি মধ্যম আকৃতির, মঞ্জুরিত ফুলগুলো অনেকটা কানের ঝুমকার মতো দোলে। ফুলে পাঁচটি পাপড়ি থাকে। ফুলের রঙ উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের।
সম্প্রতি বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে প্রকৃতি। এর মধ্যেই মুলাদী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী মিঠু হাওলাদারের বাড়ির সামনে হলুদের পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দু’টি সোনালু গাছ। রাস্তার দুই পাশে দু’টি সোনালু গাছে ঝুলে থাকা থোকায় থোকায় হলুদ ফুল সবার দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। প্রতি গ্রীষ্মেই প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে আসে ফুলগুলো।
মুলাদী সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তাছলিমা বেগম বলেন, সোনালু গাছ আমাদের প্রকৃতিরই একটি অংশ। এর ঔষধি গুণ সম্পর্কে তেমন কোনো প্রচার নেই। গাছটি বৃদ্ধি অতি ধীর হওয়ায় প্রকৃতি থেকে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে গাছটি। গাছটি যাতে হারিয়ে না যায় সে বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকা জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement