শিবালয়ে হুমকির মুখে যমুনা তীরবর্তী বসতবাড়ি ও বাঁধ
- মুরাদ খান শিবালয় (মানিকগঞ্জ)
- ০৫ মে ২০২৪, ০০:০৫
শিবালয়ে অবৈধ ড্রেজারের দৌরাত্মে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা-যমুনা তীরবর্তী বসতবাড়ি, কৃষিজমি, রাস্তাঘাট ও বেড়িবাঁধসহ সরকারি-বেসরকারি নানান স্থাপনা। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। যার কারণে এমন অবস্থায় পড়েছেন তারা।
জানা গেছে, প্রশাসনের একশ্রেণির আসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক সংগঠনের কথিত নেতা ও ভুঁইফোঁড় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে তেওতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে রমরমা মাটি বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, আরিচা নদীবন্দরসংলগ্ন নিহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে জাফরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ১৫টি ড্রেজার বসিয়ে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। পরে চাহিদা অনুযায়ী নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক ট্রলি ও ড্রাম ট্রাকযোগে নির্মাণাধীন শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় সেসব বালু বিক্রি করা হচ্ছে। আবার সরকারি রাস্তা সুড়ঙ্গ করে স্থায়ী পাইপ বসিয়ে দেড়-দুই কিলোমিটা দূরবর্তী জায়গায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরাসরি বালুমাটি বিক্রি করছে কেউ কেউ। এসব বালুমাটি অবৈধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে যমুনা নদীর নিহালপুর, তেওতা বাজার, পয়লা সমেজঘর, সাটঘর তেওতা, দক্ষিণ তেওতা ও কেডিসিসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে।
জাফরগঞ্জ এলাকার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় শত শত হেক্টর কৃষি জমি, কোটি কোটি টাকায় নির্মিত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জাফরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও গোয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দফায় দফার স্থানান্তর করা হয়েছে। ড্রেজারের দৌরাত্ম বন্ধ না হলে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নদী তীররক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনে লিখিত আবেদন করেও কোনো লাভ হয় না।
তেওতা এলাকার ড্রেজার ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি করে ড্রেজার চালাচ্ছি। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালালে আমাদের ৪-৫ লাখ টাকা পকেট থেকে চলে যায়। তেওতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের বলেন, আমি ড্রেজার ব্যবসায় জড়িত নই। তিনি বলেন, ড্রেজারে উত্তোলিত বালু স্থানীয় একটি কবরস্থান ও সরকারি প্রকল্পে ফেলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি প্রতিনিয়ত প্রশাসনকে অবহিত করছি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন কয়েকদিন পরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার গুঁড়িয়ে দেয়। কিন্তু দুই-একদিন পর আবার বালু উত্তোলন শুরু করে তারা।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অচিরে আবারো জোরালো অভিযান চালানো হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা