পাবনায় প্রচণ্ড খরায় ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি
- এস এম আলাউদ্দিন পাবনা
- ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
পাবনার লিচু চাষিরা চলতি মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ দেখে লিচুর সর্বাধিক ফলনের আশা করেছিলেন। তবে চৈত্র মাসের মাঝামাঝিতে দুই দফায় বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ মুকুল পচে ঝরে যায়। অপরদিকে গ্রীষ্মের শুরুতে প্রচণ্ড তাপদাহে এখন মুকুল থেকে বেড়ে ওঠা লিচুর গুটির বড় অংশই ঝরে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবার বাগান মালিকদের লোকসান গুনতে হবে। ইতোমধ্যেই যেসব পাইকারি ব্যাপারী মুকুল আসার সাথে সাথেই বাগান কিনেছেন তাদের এখন মাথায় হাত। লাভ তো দূরের কথা প্রায় অর্ধেক লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় চার হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৮০১ মেট্রিক টন।
সরেজমিনে পাবনার বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে জানা গেছে, ফাল্গুনের শুরুতে প্রতিটি লিচু গাছে যথেষ্ট পরিমাণ মুকুল আসায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছিল। কিন্তু চলমান খরা এবং কয়েক দফায় বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে বেশির ভাগ মুকুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লিচু চাষিদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে। বেশি হতাশায় পড়েছেন আগাম বাগান কিনে রাখা ব্যাপারীরা।
ঈশ্বরদীর সাহাপুর গ্রামের লিচু চাষি মিরাজুল শেখ বলেন, বৃষ্টিতে লিচুর মুকুলের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ গাছেই নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রীষ্মের শুরুতে যখন মুকুল থেকে গুটিতে পরিণত হচ্ছিল, সে সময় মাত্রাতিরিক্ত খরার কারণে গুটির একটি বড় অংশ ঝরে পড়েছে। তার বাগানের ৫০০ গাছের প্রতিটি গাছেই ৫০-৬০ শতাংশ মুকুল গুটিতে পরিণত হতে পারেনি।
ঈশ্বরদীর গরগরি বাগান ক্রেতা মনিরুল জানান, গাছভর্তি মুকুল দেখে ২৫ লাখ টাকার বাগান কিনেছেন। বর্তমানে তিনি চরম হতাশ। ১০ লাখ টাকার লিচুও বিক্রি করতে পারবেন কি না এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ নিয়মিত গাছে পানি স্প্রে ও সেচ দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু বিশাল বিশাল বাগানে এটা বাস্তবায়ন করা মোটেও সম্ভব হচ্ছে না।
ঈশ্বরদী উপজেলার লিচু চাষি ও ব্যবসায়ী শেখ মেহেদি হাসান বলেন, উপজেলার কৃষকদের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ নির্ভর করে লিচুর উৎপাদনের ওপর। লিচুর বাম্পার উৎপাদন হলে এ অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হবে। ফলন বিপর্যয় হলে কৃষকরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, কৃষকদের দাবি সঠিক নয়। গাছে যে পরিমাণ মুকুল আসে, তা থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফল হয়, বাকি মুকুল ঝরে যায়। এ বছর স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে। যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তার অর্ধেক ফলন হলেও লিচুর ভারে ডাল ভেঙে পড়ার কথা। তবে খরার কারণে লিচুর ক্ষতি হচ্ছে। তাপদাহ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে গাছগুলো শুষ্ক হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদের প্রতিনিয়ত গাছের উপরের দিকে পানি স্প্রে করতে এবং গাছের গোঁড়ায় পরিমাণ মতো পানি দিতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা