১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পাথরঘাটার জেলেপল্লীতে নেই ঈদ আনন্দ

নদীতে মিলছে না ইলিশ
-

ইলিশের ভরা মৌসুমেও হাসি নেই বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের মুখে। এক দিকে বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদী বিষখালী-বলেশ্বরে নেই ইলিশ, আরেক দিকে ডাঙায় এনজিওর ঋণের চাপ। এ নিয়ে ঈদের আনন্দ সবার হৃদয়ে কড়া নাড়লেও জেলেদের রাজ্যে বিষাদ। নদ-নদীতে কাক্সিক্ষত মাছ না পাওয়ায় ঋণের জালে বন্দী হয়ে আছে ঈদের আনন্দ। শিশুদের গায়ে নতুন জামা উঠবে কি না তা নিয়েই দুশ্চিন্তা। এ দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যয় বেড়েছে জেলেদের, এ কারণে ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন তারা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলায় মোট জেলে রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার। এর মধ্যে সরকারি নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৬ হাজার ৮২০ জন। মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রতি মাসে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ১৬ হাজার ২২৮ জন পরিবারকে ৮০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এ ছাড়াও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য গরু ও উপকরণ দেয়া হয়। গভীর সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে প্রণোদনার চাল বিতরণ চলছে।
উপকূলীয় জেলেরা জানান, এক দিকে অবরোধ অন্য দিকে সাগরে নিম্নচাপ। এই দুয়ে মিলে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অবরোধে মাছ ধরতে পারি না আবার নিম্নচাপের মধ্যে সাগরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারে গিয়েও খালি হাতে ফিরে আসতে হয়। এর মধ্যে কিভাবে আমরা ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঈদ করব ভেবে পাচ্ছি না। আবার আমাদের জালে ইলিশ ছাড়া অন্য কোনো মাছও ধরা পড়ে না। আমরা দাদনের জন্য ট্রলার মালিকের কাছে গেলেও তারা তাড়িয়ে দেয়। এ বছরের ঈদ জেলেদের জন্য নয়।
মৎস্য আড়তদার, ট্রলার মালিক, পাইকার ও একাধিক বাসিন্দার মতে, সাগরে মাছের সাথে এখানকার বাসিন্দাদের একেবারে মিল থাকার কারণে এবার ঈদে তেমন আনন্দের প্রভাব পড়বে না।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, জৈষ্ঠ্যের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় ইলিশের মৌসুম। এবার ঈদকে সামনে রেখে ১০ থেকে ১২ দিন আগেই সাগরে পাঠানো হয়েছে ট্রলার। ইতোমধ্যে যে ট্রলার এসেছে তার মধ্যে দু-একটি ট্রলারে মোটামুটি মাছ পেলেও অধিকাংশ ট্রলার থেকে বাজার সদাইয়ের খরচই উঠাতে পারবে না।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রোকনুজ্জামান খান বলেন, এ উপজেলার ৯০ হাজার মানুষ মৎস্য পেশার সাথে জড়িত। এই জেলেদের জন্য সরকার নির্ধারিত অবরোধগুলোতে চাল বিতরণ করা হয়ে থাকে। বর্তমান সময় রমজানের শেষ সময় আর এ কার্যক্রম চলছে। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমরা ভিজিডি চাল বিতরণ করছি এবং বর্তমানেও চলমান আছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো বিতরণ করা শেষ হবে।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, ঈদকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে জেলেদের জাটকা আহরণ বন্ধ থাকার সময়ে প্রত্যেক জেলেকে ৮০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। এটি দুই ধাপে চলবে। এ উপজেলায় মোট জেলে রয়েছে ১৬ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্য থেকে ১৬ হাজার ২২৮ জন জেলেকে ৮০ কেজি করে চাল দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement