হাসপাতালে ধারণক্ষমতার পাঁচগুণ রোগী
- আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
বরগুনার আমতলী উপজেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় রোগীদের বারান্দায় বেড দেয়া হয়েছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে পাঁচ গুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। ছয়জনের বেডে ৩০ জনের চিকিৎসা চলছে। এতে রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত বেড বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা। অপর দিকে হাসপাতালে ডায়রিয়া চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ আইভি স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রোগীদের ফার্মেসি থেকে আইভি স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবিকাদের রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালের ছয় শয্যার ডায়রিয়া রোগীর বেডের স্থলে ৩০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় রোগীদের বেড দেয়া হয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ হাসপাতাল থেকে এন্টিবায়োটিক ও কলেরার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক রোগী কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশ পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকার বলে জানা গেছে। লবণাক্ত পানি ব্যবহারেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
গতকাল মঙ্গলবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বারান্দার বেডে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালের বেডে ১১ জন এবং বারান্দায় ১৯ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত আমড়া গাছিয়া গ্রামের খাদিজা বেগম বলেন, হাসপাতাল থেকে এন্টিবায়েটিক ও স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। তার পরও বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। তিনি আরো বলেন, বেড না থাকায় বারান্দায় বেড পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। দ্রুত হাসপাতালে বেড বাড়ানো প্রয়োজন।
চাওড়া পাতাকাটা গ্রামের সাজেদা আক্তারের স্বামী জসিম উদ্দিন বলেন, দুই দিন আগে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। হাসপাতাল থেকে কিছুই দিচ্ছে না। চাওড়া ইউনিয়নের ডাক্তারবাড়ী এলাকার জাহেদা বেগমের স্বজন বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন নেই। স্যালাইন বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে।
আমতলী পৌরসভার বটতলা এলাকার শিশু রোগী রেদওয়ানের স্বজন বলেন, হাসপাতাল থেকে কিছুই দেয়নি। সব কিছু বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে বেড না থাকায় বাইরের বেডে ছেলেকে নিয়ে থাকছি। এতে সমস্যা হচ্ছে। কুকুয়া গ্রামে ৭০ বছর বয়সী রুপশা বেগম বলেন, ‘ওরে বাবা আল্লায় মোরে বাঁচাইবে কি না হেইয়্যা কইতে পারি না। মুইএ্যাকছের বায়রায় যাই।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকায় রোগীদের সংখ্যা অনেক বেশি। ধারণা করা হচ্ছে নদীর লবণ পানি ব্যবহারের ফলে এ রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আইভি স্যালাইন সরবরাহ অব্যাহত আছে। তবে আরো স্যালাইনের চাহিদা দেয়া হয়েছে। দ্রুত ওই স্যালাইন পেয়ে যাব। ডায়েরিয়া রোগী সামাল দিতে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা