বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি বাড়ছে ফরিদপুরে
- হারুন আনসারী ফরিদপুর
- ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
রমজানের শেষ দিকে এসে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ফরিদপুরবাসী। পুরো রমজানে তুলনামূলক শীতল আবহাওয়া বিরাজ করলেও মাত্র দু’দিন আগে থেকে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে গুমট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সেই সাথে মাঝে মাঝে ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেয়। আর এতেই যেন ঝেঁকে বসে লোডশেডিং। ফলে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকে নগরবাসী।
জানা গেছে, ভোরে ঝড়ো হাওয়ার কারণে একনাগাড়ে প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। নগর ও গ্রাম মিলিয়ে গোটা জেলাতেই এই দশা বিরাজ করছিল। এর আগে রাতে দুই দফায় বিদ্যুৎ চলে যায়। অনেক স্থানে আরো বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
শহরের আলীপুরে কবি জসীমউদদীন সড়কের বাসিন্দা গৃহবধূ লিপিকা সুলতানা বলেন, এশার নামাজের সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। তারপর রাত ৯টার দিকে আসে। আবার রাত ১টার দিকে চলে যায় বিদ্যুৎ। এরপর ভোরে ঝড়ের সময়ও বিদ্যুৎ ছিল না। সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎ আসে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পৌরসভার পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। সকালে অফিসগামীরা মটর চালাতে না পেরে পানি তুলতে পারেনি। অনেকে গোসল না সেরেই অফিসে চলে যান।
আরো খারাপ দশা ছিল গ্রামের দিকে। নগরকান্দার তালমা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার পর এশার আগে কারেন্ট চলে যায়। তারাবি নামাজ শেষ হওয়ার একটু আগে আসে। এরপর সকালে আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। মধ্যরাতেও আরেকবার বিদ্যুৎ যায়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু বলেন, উষ্ণতা সামান্য একটু বেড়ে যাওয়াতেই এমন অবস্থা। আগামী দিনে কী হবে সেটাই ভাবনার বিষয়। গত বছর গরমে লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগের কথা এখনো মানুষ ভুলতে পারেনি।
এ ব্যাপারে ওজোপাডিকো ফরিদপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর কিছুটা সময় বিদ্যুৎ ছিল না। আর ফজর নামাজের পর ঝড়ের কারণে কিছুটা সময় লাইন ফল্ট করেছিল। তবে আপাতত অন্য আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ফরিদপুরে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এর সরবরাহ এলাকায় ২০ থেকে ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সরবরাহও চাহিদামাফিক রয়েছে। গতকাল তিন থেকে সাড়ে তিন মেগাওয়াট কম সরবরাহ হওয়ায় কিছুটা লোডশেডিং করতে হয়। আগামীকাল লোডশেডিং হবে কি না বা আজকেও হবে কি না তা জানা নেই।
ওজোপাডিকো ফরিদপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার খুরশিদ আলম বলেন, ঝড়ের কারণে আমাদের সব কটি ফিডার বন্ধ ছিল। অনেক জায়গায় গাছপালা পড়ে সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ ঘটে। এজন্য দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না। এ ছাড়া আরো কয়েকটি স্থানে কারেন্ট ছিল না টেকনিক্যাল কারণে, লোডশেডিংয়ের কারণে নয়। তিনি জানান, তার কেন্দ্রে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২৩ মেগাওয়াটের মতো। সরবরাহও তাই।
ওজোপাডিকো ফরিদপুরের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় তাদের গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৯০ হাজারের মতো। এর বিপরীতে বিদ্যুতের চাহিদা পিকআওয়ারে ৪৮ মেগাওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। দু’টি কেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয়। এর বাইরে জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ। তাদের চাহিদার পরিমাণ ১০৬ মেগাওয়াটের মতো। শহরের তুলনায় গ্রামেই লোডশেডিং বেশি হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ সঙ্কটের পাশাপাশি সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় কোনো কোনো স্থানে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা