১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চলতি মৌসুমে মরিচ চাষে লোকসান, হতাশ চাষিরা

নিকলীর হাওর এলাকায় নারীকর্মীদের মরিচ উত্তোলনের দৃশ্য : নয়া দিগন্ত -

চলতি মৌসুমে হাওরে মরিচ চাষে লসে মাথায় হাত পড়েছে চাষীদের! চাষিরা বলছেন, খাটুনি ও খরচ দুটোই বেশি মরিচ চাষে। চলতি মৌসুমে ফলন কমের পাশাপাশি দামও কম। সব দিক বিবেচনায় হতাশ স্থানীয় কৃষকেরা। নারী শ্রমিকদের ভাষ্য, রোজা রেখে সারাদিন সবোর্চ্চ ৪০ কেজি মরিচ উত্তোলন করলে পাওয়া যায় পাঁচ কেজি। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় মরিচের আবাদ হয়েছে চার হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি।
জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ফলন্ত গাছ শুকিয়ে কালো বর্ণের হয়ে গেছে। কোনো কোনো জমিতে শুধু আগাছার দেখা মিলে। অনেকগুলোতে আবার কাঁচা-পাকা মরিচসহ গাছ মরে যাওয়া উপক্রম। অথচ এই মৌসুমে গাছগুলোতে মরিচে ভরপুর থাকার কথা। লাল বর্ণের মরিচের সোনালি রঙের ঝলকানিতে কৃষকের মুখে হাঁসি থাকার কথা থাকলেও কৃষাণ-কৃষাণিদের মুখ কালো মেঘের মতো হয়ে আছে।
জানা গেছে, গত মৌসুমের মতো চড়া দামের আশায় এবার হাঁটু গেড়ে বসেছিলেন হাওরের কৃষকেরা। চড়া দামে ঔষধ, কীটনাশক, সার, বীজ, সেচ দিতে গিয়ে অনেকেই ঋণ করেছেন। গত মৌসুমে কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ১০০ টাকা থাকলেও চলতি মৌসুমে ১০ থেকে ২০ টাকায় নেমে এসেছে।
শ্রম বৈষম্যের কারণে হাওর অঞ্চলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে নারী শ্রমিকদের। শতাধিক নারী শ্রমিক জানান, সারা দিন রোজা রেখে রোদে পুড়ে মরিচ তুলতে পারি ৪০ থেকে ৫০ কেজি। মরিচ উত্তোলনকারী বেশিরভাগ নারী বয়স্ক বিধবা কিংবা স্বামী পরিত্যক্তা। এমনকি অল্প বয়সের গরীব কিশোরীরাও মরিচ তোলে ক্ষেত থেকে। ৪০ কেজি মরিচ তুলতে পারলে পাওয়া যায় মাত্র পাঁচ কেজি। কেউবা আবার ১৫০ থেকে ২০০ টাকা রোজগারের আশায় সারাদিন মরিচ তুলেন।
হাওরে প্রচণ্ড রোদে রোজা রেখে অসুস্থ শরীরে মরিচ তুলছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা বিধবা চান বানু। নিঃসন্তান চানবানু মাত্র এক থেকে দেড় কেজি মরিচ তুলতে পারেন। মরিচের দাম কম থাকায় এতে তার পোষায় না বলে তিনি হতাশ। এছাড়াও অসুস্থ শরীরে মরিচ তোলেন পাড়া বাজিতপুরের নারায়ণ ও তার স্ত্রী সুভা রানী বর্মণ। সুভা রানী বলেন, নারীরা পরিশ্রম করে পুরুষের সমান, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি। অথচ তারা কম টাকা পায়।
নিকলী উপজেলার মরিচ চাষি চান্দু মিয়া, খুরশিদ আলম, জজ মিয়াসহ অনেকেই জানান, চলতি মৌসুমে মরিচ চাষে প্রচুর লস। ১০ থেকে ২০ টাকায়ও মরিচ কেউ নিতে চাচ্ছে না। শুকনো মরিচও বর্তমানে প্রতি মন ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত মৌসুমে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা ছিল। অষ্টগ্রাম উপজেলার হোসেন আলী ভুঁইয়া, আলিমদ্দিন ভুঁইয়া ও কাশেম আলীসহ অনেকেই জানান, চলতি মৌসুমে মরিচ চাষে লসের মুখ দেখছেন তারা।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস ছাত্তার বলেন, গাছ মরে যাওয়ার অন্যতম কারণ এক প্রকারের ছত্রাক। সঠিক সময়ে ঔষধ প্রয়োগ করা হলে ক্ষেতে এ সমস্যাটা থাকে না। তাছাড়া দামের বিষয়টি নির্ভর করে উৎপাদনের ওপর।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে ৫৩ নাগরিকের উদ্বেগ ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে দুর্নীতি কে প্রশয় দেয়া হবে না : জাতীয় নাগরিক কমিটি ফতুল্লা থেকে অপহৃত ২ শিশু বরিশাল থেকে উদ্ধার মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করা শিক্ষককে চাকরিচ্যুতের দাবি টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি ট্রাম্প আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য দিবসে রিকের র‌্যালি ও মানববন্ধন অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল চুয়েটে র‌্যাগিংয়ের দায়ে ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ঢাকায় উচ্চমাত্রার হর্ন ব্যবহার না করতে ডিএমপির নির্দেশনা তামিমের ঝড়ে জয় পেল চট্টগ্রাম তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা, কর্মকর্তা প্রত্যাহার

সকল