১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হোসেনপুরে মাছ ও মুরগির খামারে কলেজছাত্র অভির বাজিমাত

অভি ও তার পোলট্রি খামার : নয়া দিগন্ত -

পড়াশোনার পাশাপাশি মাছ চাষ ও মুরগি পালন করে সফলতা পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের কলেজছাত্র সাদমান হাসান অভি। মাছ চাষ ও মুরগি পালন করে তার প্রতি মাসে লাখ টাকার বেশি আয় হচ্ছে। তরুণ উদ্যোক্তা অভির এমন অভাবনীয় সফলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক মাছ চাষ ও মুরগি পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
অভি উপজেলার পুমদি ইউনিয়নের নান্দানিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলাম মানিকের ছেলে। তিনি হোসেনপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। অভির বাবা এখন বৃদ্ধ। কাজকর্ম করতে পারেন না।
জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল অভির। সেই স্বপ্ন থেকেই তিনি নবম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় শুরু করেন মুরগির খামার। বর্তমানে তার মাঝারি আকারের একটি খামারে তিন হাজারেরও বেশি মুরগি রয়েছে। মুরগি খামারের পাশাপাশি অভির রয়েছে ৬০ শতক জমির উপর দু’টি মাছের খামার। মাছের খামারে দেশীয় জাতের রুই, কাতলা, মৃগেল, সরপুঁটির চাষ করছেন তিনি। আর এভাবেই তিনি ছাত্রাবস্থায় একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

অভি বলেন, ‘করোনার সময়ে আফতাব পোলট্রি খামার নামে ছোট্ট একটি খামার চালাতেন বাবা। কিন্তু তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় খামারটি বন্ধ হয়ে যায়। আমি তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। তখন নিজের উদ্যোগে অল্প কয়েকটি মুরগি নিয়ে ওই বন্ধ হয়ে যাওয়া খামারটি চালু করি। বর্তমানে আমি আলাদা জায়গায় খামার করেছি। সেখানে তিন হাজার মুরগির বাচ্চা রয়েছে। দুই মাস পালন করার পর সেগুলো বিক্রির উপযুক্ত মুরগিতে পরিণত হবে। এই খামার থেকে মাসে আমার খরচ বাদে লাখ টাকার মতো আয় হচ্ছে।’
অভির খামারের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হচ্ছে এলাকার অনেক বেকার যুবক। তাকে অনুসরণ করে প্রতিবেশী মিনু মিয়াও গড়ে তুলেছেন একটি মুরগি ও মাছের সমন্বিত খামার। অভি বলেন, মুরগির স্বাভাবিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা খাবার খাওয়াতে হবে। তারা স্টেরয়েডমুক্ত খাবার খাইয়ে মুরগি পালন করেন বিধায় এলাকাবাসী কিছুটা বেশি দাম দিয়ে তার কাছ থেকে মুরগি কিনে নিয়ে যায়।
অভির বাবা জহিরুল ইসলাম মানিক বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি অভি কিছু একটা করতে চেয়েছে, আমি তাকে সমর্থন দিয়েছি। অভি যদি মাছ ও মুরগির খামার এভাবে ধরে রাখতে পারে তাহলে একদিন বড় উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: উজ্জ্বল হোসাইন জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি অভি নিজেকে তরুণ উদ্যোক্ত হিসেবে গড়ে তুলছেন। আমি তাকে স্বাগত জানাই। তার সফলতা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে, এমনটাই বিশ্বাস করি।


আরো সংবাদ



premium cement