জামালপুরে বিয়েবন্ধনের প্রায় অর্ধেক বিচ্ছেদ
- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
- এক বছরে বিয়েবন্ধন ৯ হাজার
- বিয়েবিচ্ছেদ সোয়া ৪ হাজার
জামালপুরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বিয়েবিচ্ছেদের মতো দুঃখজনক ঘটনা। জেলা রেজিস্ট্রারের তথ্য মতে ২০২২ সালে জেলায় ৪,২৩৬ জন দম্পতির সংসার ভেঙেছে। অনেকেই হচ্ছেন পরকীয়ার বলি। প্রতিদিন গড়ে ১১টি দম্পতির বিয়েবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। তবে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের বাইরেও বিয়েবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
জামালপুর জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ হাজার ১৭৬ জনের বিয়েবন্ধন হয়েছে। আর বিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে ৪,২৩৬টি। তথ্য বলছে প্রতি দিন গড়ে ২৫টি বিয়ে হয়েছে। আর বিচ্ছেদ (তালাক) হয়েছে ১১ দম্পতির। এর মধ্যে মেয়েরা তালাক দিয়েছে এক হাজার ৩৮১টি, ছেলেরা তালাক দিয়েছে ৫৬৫টি। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিচ্ছেদ ঘটছে জামালপুর সদর উপজেলায়। আর সবচেয়ে কম বিচ্ছেদ হয়েছে মাদারগঞ্জ উপজেলায়। ২০২১ সালে বিচ্ছেদ ছিল ৩ হাজার ৮০৩ জন। ২০২২ সালে বেড়েছে ১ হাজার।
জামালপুর সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক সভাপতি এবং মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, আমরা বিয়েবিচ্ছেদের (তালাক) এ চিত্র দেখে বিস্মিত হয়েছি। বাঙালি হাজার বছরের ইসলামধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ভিনদেশী সংস্কৃতি দেখে আমাদের মা-বোনেরা পরকীয়ায় আসক্ত হচ্ছে এবং ধর্মীয় অনুশাসন না মানায় তালাকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে মানুষ গুরুত্ব দিলে বিয়েবিচ্ছেদ অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করেন এ মানবাধিকার কর্মী।
মহিলাবিষয়ক অধিদফতর জামালপুর কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কামরুন্নাহার বলেন, এক সময় নারীরা স্বামীর নির্যাতন মেনে নিতেন। এখন নারীরা নির্যাতন হলেই তার প্রতিকার চায়। আমরা নারীদের সবসময় সহযোগিতা করি। নারীরা এলে কাউন্সিলিং করি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিভাগের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মানিক মিয়া বলেন, শাশুড়িদের অসামাজিকতা, নিরক্ষরতা, মোবাইলের অবাধ ব্যবহার, সামাজিক অবক্ষয়, দরিদ্রতা, অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে, নারীদের অধিক চাহিদা, ভারতীয় সিরিয়াল, পরকীয়া ও পারিবারিক বন্ধনে দূরত্ব সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ কমে গেছে। এসব অবক্ষয়কে বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিজ্ঞ এ আইনজীবী।
তিনি আরা বলেন, আমরা দেখতে পাই পরিবারের ছোট্ট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা হয়েছে। পরে বিয়েবিচ্ছেদের মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, সমাজে নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বাল্য বিয়ে বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সমাজে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করা গেলে সামাজিক অবক্ষয় রোধ বিয়েবিচ্ছেদ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা