২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩০, ২০ মহররম ১৪৪৬
`

মাত্র ৫০ বছরেই শুকিয়ে গেল আস্ত একটা সমুদ্র

মাত্র ৫০ বছরেই শুকিয়ে গেল আস্ত একটা সমুদ্র - ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাব ধ্বংসের মুখে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সারা বিশ্বকে। চলতি বছরেই, প্রথমবারের মতো বিশ্ব গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির উপরে চলে গিয়েছে। যাইহোক, এর এক দশকেরও বেশি আগে, পৃথিবী একটি সম্পূর্ণ সাগরকে অদৃশ্য হতে দেখেছিল। এর নাম ছিল আরাল সাগর। কাজাখস্তান এবং উজবেকিস্তানের মধ্যে অবস্থিত এই সাগর ২০১০ সালের মধ্যে শুকিয়ে গিয়েছিল।

১৯৬০-এর দশকের শুরু থেকেই শুকিয়ে যাচ্ছিল সাগরের পানি। সোভিয়েত সেচ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে কমতে থাকে আরাল সাগরের পানি। মাত্র ৫০ বছরের মধ্যেই আরাল সাগরের শুকিয়ে যাওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। পরিবেশ ধ্বংসের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ এটি। এই সাগরকে একসময় গড়ে উঠেছিল জনজীবন। ৬৮,০০০ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত আরাল সাগর এখন সম্পূর্ণরূপে পৃথিবীর চোখের আড়ালেই চলে গেছে। শুধুমাত্র একটি নির্জন ল্যান্ডস্কেপ রেখে গেছে এটি।

কেন শুকিয়ে গেল আরাল সাগরের পানি
নাসার আর্থ অবজারভেটরি আরাল সাগরের অদৃশ্য হওয়ার কারণ সম্পর্কে একটি বিশদ বিশ্লেষণ পোস্ট করেছে। ১৯৬০-এর দশকে, সোভিয়েত ইউনিয়ন সেচের উদ্দেশ্যে কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের শুষ্ক মরুভূমিতে একটি বড় পরিমাণে পানি পরিবর্তন প্রকল্প শুরু করে। মূলত শুষ্ক অঞ্চলে তুলাসহ অন্যান্য ফসল চাষের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক এই বৃহৎ পানি সরানোর পরিকল্পনাই আরালের পানি শুকিয়ে যাওয়ার আসল কারণ, বলে দাবি করেছে নাসার আর্থ অবজারভেটরি।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা জানিয়েছে যে আরাল সাগরটি নিওজিন যুগের শেষে (২৩ থেকে ২৬ মিলিয়ন বছর আগে) গঠিত হয়েছিল যখন দুটি নদী অর্থাৎ উত্তরে সির দরিয়া এবং দক্ষিণে আমু দরিয়া, তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে অভ্যন্তরীণ হ্রদ আরাল সাগরের উচ্চ পানির স্তর বজায় রেখেছিল। এরপর চাষাবাদের জন্য এই দুটি নদী থেকেই পানি সেচ করতে গিয়ে পানির অভাবে শুকিয়ে যায় আরাল সাগর।

আরাল সাগর উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ২৭০ মাইল (৪৩৫ কিমি) এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে ১৮০ মাইলেরও (২৯০ কিমি) বেশি বিস্তৃত ছিল। কিন্তু খামার তৈরির জন্য নদীর পানি সরিয়ে নেয়ার পর সাগরের পানি কমে যায় এবং সমগ্র সাগর বাষ্পীভূত হয়ে যায়। যদিও এর হ্রদের কিছু অংশ বাঁচানোর প্রচেষ্টায়, কাজাখস্তান আরাল সাগরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে একটি বাঁধ তৈরি করেছে। কিন্তু এখন পানির উৎসকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement