২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এরদোগানকে হারাতে লড়বেন ‘মাদার মেরাল’

এরদোগানকে হারাতে লড়বেন ‘মাদার মেরাল’ - সংগৃহীত

তুরস্কের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন মেরাল আকসেনার। তার লক্ষ্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোগানকে হারিয়ে দেয়া। নির্বাচনে জনমত তৈরিতে তুরস্কের আনাচে কানাচে যাচ্ছে মেরাল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারীদের কাছ থেকে স্কার্ফ সংগ্রহ করছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারলে দেশটির প্রেসিডেন্টের জন্য ব্যবহৃত হওয়া সাবেক প্রাসাদ কানকায়ার সামনে এসব স্কার্ফের একটি প্রদর্শনী করবেন তিনি। মেরাল এই প্রচারণার নাম দিয়েছেন ‘ইয়েমেনি বিপ্লব’। তুর্কি ভাষায় এসব স্কার্ফকে ‘ইয়েমেনি’ নামে ডাকা হয়।

সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণায় আদানা শহরে অবস্থানকালে সিএনএন’কে মেরাল বলেন, ‘তুর্কি দীর্ঘ দিন ধরে একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তির শাসনে আছে।’ তুরস্কের ভেতরে বাইরে মেরাল আকসেনারকে বিভিন্ন নাম ও উপাধিতে ডাকা হয়। অনেকে তাকে তুরস্কের ‘লৌহ মানবী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তুরস্কের বাইরের লোকজন তাকে সবথেকে বেশি এই নামে ডেকে থাকেন। আর তুরস্কের ভেতরের নাগরিকেরা তাকে ডেকে থাকেন ‘আসেনা’ নামে। তুরস্কের রূপকথায় আসেনা হলো এক নারী নেকড়ে যে কিনা তুরস্কের গোত্রগুলোকে নিরাপত্তা দেয়। তবে মেরাল সবথেকে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ‘মাদার মেরাল’ নামে। তিনি বলেন, কেউ কেউ আমাকে সিস্টার মেরাল বলে। তবে অল্প বয়স্কদের একটি বড় অংশ আমাকে ‘মাদার মেরাল’ নামে ডাকে। আর আমি ‘মা’ হয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করি।

আগামী ২৪ জুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একমাত্রী নারী প্রার্থী হিসেবে লড়বেন মেরাল। তার দলের নাম ইই পার্টি যার ইংরেজি করলে নাম দাঁড়ায় গুড পার্টি। মেরালের দল রাজনীতিতে নতুন হলেও মেরালের এর আগে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা আছে। ১৯৯৭ সালে আট মাস তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মেরাল আকসেনার।

ইরাকে তুরস্কের বিমান হামলার ব্যাপারে যা বললেন এরদোগান

ইরাকের কান্দিল পার্বত্য এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) উঁচু পর্যায়ের নেতাদের এক বৈঠকে তুরস্ক বিমান হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান এ কথা জানিয়েছেন।

তুরস্কের ক্যানাল-৭ টেলিভিশনকে শনিবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘সর্বশেষ অভিযানে আমরা তাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে হামলা চালিয়েছি। হামলার ফলাফল সম্পর্কে এখনো জানতে পারিনি তবে এটা নিশ্চিত যে, তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, ইরাকের ২০ কিলোমিটার ভেতরে তুর্কি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে যা কান্দিল পর্বত থেকে বেশি দূরে নয়।

এর আগে, গত সপ্তাহে তুর্কি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উত্তর ইরাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত পিকেকের ১২টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

কান্দিল পার্বত্যাঞ্চলটি তুর্কি সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ইরাকের ভেতরে অবস্থিত। তুরস্ক মনে করে, এ এলাকাটিকে পিকেকে গেরিলারা তাদের তৎপরতার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

এরদোগান জিতে যাচ্ছেন নাকি হেরে যাচ্ছেন?

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোগানকে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া হবে কিনা- তা ২৪ জুনের নির্বাচনে নির্ধারণ করবেন তুর্কি ভোটাররা। বলা হচ্ছে- নতুন প্রেসিডেন্ট দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন।

নাগরিক অধিকার দমন, দেশের বর্তমান ভঙ্গুর অর্থনীতি এবং প্রতিকূল বৈদেশিক নীতির কারণে অনেকেই বলেছিলেন যে তারা এরদোগানের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। তাদের অনেকের বিশ্বাস, এরদোগান হয়ত এবার হেরে যাচ্ছেন।

এর উল্টো চিত্র, এরদোগানের সমর্থকদের মধ্যে। এরদোগান নির্বাচনে হেরে যাবেন- এমন কোনো পরিস্থিতির কথা তারা কল্পনাও করতে পারছেন না।

ইস্তাম্বুলের ২৫ বছর বয়সী ওমার ইলিমাজ এরদোগানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি সুনামি বন্ধ করতে পারবেন না। তিনি সুনামির মতো দেশকে ধ্বংস করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরদোগান হেরে গেলেও তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না। তিনি জয়ী হওয়ার জন্য সবকিছু করবেন।’

দেশের উন্নয়নের জন্য একজন শক্তিশালী নির্বাহী প্রধানের প্রয়োজনের কথা বলে নির্ধারিত সময়ের ১৮ মাস আগেই এরদোগান আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।

গত বছরের গণভোটে একজন শক্তিশালী প্রেসিডেন্টের পক্ষে রায় দেয় দেশটির জনগণ। এই রায়ের ফলে প্রধানমন্ত্রীর পদ বাতিল করা হয় এবং প্রেসিডেন্টকে বিচারপতিদের নিয়োগ এবং ডিক্রি জারির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। গণভোটের আগে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট পদটি ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।

এরদোগান এরই মধ্যে তর্কসাপেক্ষে তুরস্ককে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ইস্তাম্বুল সাবেক মেয়র এখন রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থার অধীনে দেশ পরিচালনা করছেন। ২০১০৬ সালের ১৫ জুলাইে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরে এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর এরদোগান অনেক সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক বিরোধীদের জেলে ঢুকিয়েছেন। এ নিয়ে কিছুটা সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন তিনি।

ইস্তাম্বুলের বিলগি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক ইলটার তারোন বলেন, ‘এরদোগানের কঠোর শাসনে অনেক নাগরিক ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য এরদোগান সম্ভবত ৫১ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন না। তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য এখানে সুযোগ রয়েছে।’

এরদোগান দেশটিতে রক্ষণশীল ইসলামিক আদর্শ অনুসরণের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন। পাবলিক সেক্টরে চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য হিজাব পরা অনেকটা বাধ্যতামূলক করেছেন এবং অ্যালকোহলের বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের কিছু ধর্ম নিরপেক্ষ দেশগুলির মতো অনেক তুর্কি রক্ষণশীল ইসলামিক আদর্শ থেকে দূরে থাকতে চান। এ নিয়ে অনেক তুর্কিই এরদোগানের ওপর বিরক্ত।

নিলগন ইয়িলমেজ (৫৬) নামে ইস্তাম্বুলের একজন হিসাবরক্ষক বলেন, ‘আপনি যদি সমালোচনা করেন, তবে আপনাকে বহিস্কার করা হয়। এখানে কেবল এরদোগানের প্রশংসা করার স্বাধীনতা আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে চাই।’

ভিন্ন চিত্র এরদোগানের সমর্থকদের। সালিহা কোসকুন (৪৬) নামে একজন গৃহিনী বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট দেশের জন্য অনেক ভাল কাজ করেছেন। এ কারণে আমি অন্য কাউকে ভোট দিতে পারি, তা ভাবতেও পারছি না।’

এই গৃহিণী আরো বলেন, ‘তিনি হেরে যাবেন, তা আমি চিন্তা করতে চাই না। তিনি হেরে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে – আমাদের সব অর্জনকে হারিয়ে ফেলা। আল্লাহর ইচ্ছায়, তিনি আবারো জয়ী হবেন।’


আরো সংবাদ



premium cement
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায়

সকল