২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বান্ধবীর সাথে ইউএনও’র অবৈধ সম্পর্ক : জীবননাশের হুমকী

- ছবি : সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে তার বান্ধবীর আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা গত রোববার (০৯ জুন) দু'পক্ষকে ডাকলেও সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় হাজির হননি। তার সময় চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ১৬ জুন দিন ধার্য করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) এমরান হোসেন। গত রোববার  সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন অভিযুক্ত ইউএনও। এদিকে ইউএনও’র ওই ঘটনায় পুরো জেলা ও তাহিরপুর  উপজেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পড়েছেন চরম বিব্রতকর অবস্থায়।

অভিযোগকারী ওই নারী জানান, গত রোববার আমার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, আগের দিন আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হয়। আমি এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছি। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সময় চেয়েছিলাম। আগামী ১৬ জুন সময় দিয়েছেন। কিন্তু, আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। গত সোমবার ০১৮১২৪৮৭৫৮১ নম্বর থেকে ফোন করে হত্যার হুমকি দিয়েছে।পরিচয় না দিয়ে ওই নম্বর থেকে আমাকে ১৬ জুন সাক্ষ্য দিতে না আসার জন্য বলা হয়। হুমকিদাতা বলেন, ‘এই তুই আসবি না, কি করবি তুই, একবার তোর শিক্ষা হয় নাই? ১৬ তারিখে আয় তুই, দেখ না কি করি’।

হুমকীর অডিও

ওই নারী আরো জানান, এমন হুমকির বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জানিয়েছি। কিন্তু, তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আমার কাজ তদন্ত করা। ওটা (নিরাপত্তা) আমার কাজের বাইরে। তদন্ত কর্মকর্তা ফোন রাখার সময় আমাকে ‘ফালতু’ বলেও গালি দিয়েছেন- যোগ করেন তিনি। এ অবস্থায় ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করে মেইলে পাঠিয়েছি। তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন না হলে সুনামগঞ্জে সাক্ষ্য দিতেও যাবেন না বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বপালনকারী সুনামগঞ্জে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এমরান হোসেনের কাছে জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে তিনি নয়াদিগন্তকে জানান, আমি এখন ছেলের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।  

এদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজ বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার ঘটনার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকায় তোলপার শুরু হয়। তাহিরপুরসহ জেলার সব ক’টি উপজেলায় ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজ কে নিয়ে সমালোচনা থেমে নেই। বিশেষ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সাধারণ মানুষও এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ। তাই বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে কার্যালয়ে না এসে অধিকাংশ সময়ে বাসায় বসে অফিস করছেন ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজ এমনটিই জানা গেছে। এছাড়াও তার ব্যবহৃত সরকারি ফোন নাম্বারটিতে কল দিলেও কেউ পাচ্ছেন না তাকে। অনেক সময় সরকারি নম্বর বন্ধ থাকে। ফলে উপজেলাবাসী তার কাছ থেকে কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছেন না। উপজেলাবাসীসহ জনসাধারণ এমন অফিসারকে আর তাহিরপুর দেখতে চান না বলে জানান বেশ ক’জন।

জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় নব-যোগদানকারী ইউএনও তার পূর্বের কর্মস্থল চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় পূর্বে বিয়ে করা স্ত্রীর সাথে ডির্ভোস হয়। কিন্তু শ্বশুর পেশাদার উকিল হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ বিলম্বিত হচ্ছিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডিসি (এলএ) আসিফ ইমতিয়াজের। কিন্তু পরিচিত হওয়া নতুন বান্ধবীর সাথে সংসার করার তর সইছিল না তার। শেষ পর্যন্ত পৃথক বাসা নিয়ে বিয়ে না করেই গোপনে অবিলাস করেন। অসাবধানতাবশত পেটে চলে আসে সন্তান। সব কিছুই গোপন রেখে আসিফ চাইছিলেন অনাগত সন্তানকে গর্ভপাত ঘটাতে। কিন্তু রাজি হলেন না বান্ধবী। এ নিয়ে সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেন সেই বান্ধবী।

 গত ০৩ এপ্রিল লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে বিচার চান ওই নারী। এরপর একজন এডিসিকে বিষয়টির তদন্তভার দেয়া হয়। এডিসিকে এ ঘটনা অস্বীকার করেন আসিফ ইমতিয়াজ। পরে চট্টগ্রাম প্রশাসন তাকে বদলির জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ করে। পরে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাহিরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে বদলি করা হয়। বদলির পরই তার জীবনের কলঙ্কিত ঘটনাটি আরো ব্যাপকভাবে প্রচার পায়। সর্বশেষ এ নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যিনি এমন একটি জঘন্য কাজ করেছেন তিনি কীভাবে এই উপজেলাবাসীর উন্নয়নে ভাল কাজ করবেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় এখন উপজেলার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এখন তদন্ত করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আমরাও আছি খুবেই লজ্জার মাঝে এই বিয়ষটি নিয়ে।  

তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থার মাঝে আছি। ইউএনওর বিষয়ে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারছি না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজের মোবাইল ফোনে অসংখ্যবার ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিফ করেননি।


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ গৃহবধূ গ্রেফতার জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী

সকল