২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিলেট-২ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী

তাহসিনা রুশদী লুনা - ছবি : সংগ্রহ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হচ্ছে বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-২। এই আসনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী থাকলেও একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় অনেকটাই বেকায়দায় আওয়ামীলীগ।

বিএনপি থেকে এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা। একক প্রার্থী হওয়ায় তিনি মনোনয়ন দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন, যদিও ২০দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাসির আলীও আসনটিতে জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন চাইছেন।

প্রভাবশালী বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকে আভ্যন্তরীণ বিরোধসহ বিভিন্ন কারণে কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে বিএনপি। বিভিন্ন মামলা-হামলায় নেতাকর্মীরা জর্জরিত হয়ে নেতাকর্মীদের স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সবর উপস্থিতি নেই। তবে সম্প্রতি ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদী লুনাকে ঘিরে আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তারা। নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রস্তুত রয়েছেন লুনাও। অপরদিকে, ২৩দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল খেলাফত মজলিস এই আসনে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুসতারি আলীকে জোট থেকে মনোনয়ন প্রদানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। তবে এই আসনের ভোটাররা ইলিয়াস আলীর বিষয়ে বেশ আবেগতাড়িত। তাই এই আসনে তাহসিনা রুশদী লুনা প্রার্থী হলে ভোট বিপ্লব ঘটবে বলে আশাবাদী বিএনপির নেতাকর্মীরা।

অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র আওয়ামী লীগে। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়ে এই আসনে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী। পরবর্তীতে দশম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া। এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি একে অন্যকে ছাড় দিতে নারাজ।

১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির মকসুদ ইবনে আজিজ লামা, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের শাহ আজিজুর রহমান, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির এম ইলিয়াস আলী, এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী।

৯ম ও ১০ম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামীলীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানের মধ্যে কোন্দল ছিলো তুঙ্গে। উভয়েই দলীয় মনোনয়ের জন্য ছিলেন মরিয়া। ৯ম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেন শফিক চৌধুরী। তখন বঞ্চিত হন মুহিব।

এরপর ১০ম সংসদ নির্বাচেন ফের শফিক চৌধুরী ও মহিবুর রহমান মনোনয়ন যুদ্ধে অবতীর্ণ হলে বঞ্চিত হন দু’জনই। আসনটি চলে যায় জাতীয় পার্টির কব্জায়। মহাজোটের প্রার্থী হয়ে এমপি হন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া। মুহিব সেবার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন।

নির্বাচনে এহিয়া চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেন শফিক চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী; কিন্ত সময়ের ব্যবধানে পাল্টে যায় রাজনীতির চিত্র। এহিয়া চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্ধী মুহিবুর রহমানের সেই দূরত্ব এবার না থাকলেও দূরত্ব সৃষ্টি হয় শফিক চৌধুরীর। তাই এবারের নির্বাচনে এহিয়া চৌধুরীকে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগের শফিক চৌধুরী। তিনি এবার নৌকার প্রার্থী হতে চান। অপরদিকে, বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী নির্বাচনের ব্যাপারে এবারও অনড়। জাতীয় পার্টি জোটগত ভাবে আসনটি চাইবে আওয়ামী লীগের কাছে।

সূত্রে জানা যায়, সিলেট-২ আসনে এবার জাতীয় পার্টিকে ছাড় না দিতে কেন্দ্রে জোর দাবি জানিয়েছে আসছেন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান এমপি ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী। তাই তিনি সিলেট-২ এর পাশাপাশি সিলেট-৩ আসনের জন্যও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

এই আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও শেফিল্ড শাখার সভাপতি মোহিদ আলী মিঠু ও যুক্তরাজ্য কার্ডিফ আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শাহজাহান।

শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে বিভক্ত বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর আওয়ামী লীগ। তারা কেউ কাউকেই ছাড় দিতে নারাজ। তবে ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত এ দুজনের মধ্যে কোন একজন দলীয় মনোনয়ন পাবেন এমনটাই তৃণমূলের নেতৃকার্মীরা মনে করছেন।

আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও খেলাফত মজলিস ছাড়াও এই আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন- সতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার মাওলানা মুহাম্মদ আমির উদ্দিন ও ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা যুগ্ম সম্পাদক আ ক ম এনামুল হক।


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরদীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড ‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের

সকল